পড়াশোনার বাড়তি চাপ আর মাদ্রাসার কড়া নিয়মকানুন কোনটাই ভালো লাগে না তাদের। তাই নিয়মের বেড়াজাল থেকে নিজেদের মুক্ত করতে মাদ্রাসার আবাসিক থেকে পালিয়েছিলেন আব্দুল আলীম (১৪), রাফিদ ইসলাম (১২)ও আব্দুল্লাহ (১২) নামের তিন ছাত্র।
তবে, তাতেও কাজ হয়নি। খুলনা থেকে পালানোর একদিন পরই তাদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ জুন) রাত নয়টায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুল ইসলাম ওই তিন ছাত্রকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।
পলাতক তিন মাদ্রাসা ছাত্র হলেন, খুলনার রুপসা উপজেলার খান মোহাম্মদপুর গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে আব্দুল আলীম, শিরগাতী গ্রামের ইকরাম শেখের ছেলে রাফিদ, মিল্কিদিয়ারা গ্রামের হুসাইন আহম্মেদের ছেলে আব্দুল্লাহ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পড়াশোনার বাড়তি চাপ আর মাদ্রসার কড়া নিয়মকানুন থেকে নিজেদের মুক্ত করতে সোমবার (৬ জুন) ঐ তিন ছাত্র মাদ্রাসা থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর খুলনা স্টেশন থেকে রাজশাহীগামী একটি ট্রেনে ওঠে তারা। ট্রেনটি ঈশ্বরদীর পাকশী স্টেশনে বিরতি দিলে ঐ তিন মাদ্রাসা ছাত্র পানির পিপাসা নিবারণের জন্য নেমে পড়ে। কিন্তু পানি খেয়ে ট্রেনে উঠার আগেই স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। সন্ধ্যার পর তাদের রুপপুর মোড়ে ঘোরাফেরা করতে দেখে রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচাজ এসআই আতিকুল ইসলাম জিজ্ঞেস করলে তারা হারিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
তাদের মুখ থেকে ঘটনা শুনে তাদের রাতের খাওয়া ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করেন এসআই আতিকুল। এরপর ঐ মাদ্রাসা ছাত্রদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে রুপসা থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে তাদের পরিবারের কাছে খবর দিতে বলেন।
পরে রুপসা থানার পুলিশ কর্মকর্তা নিখোঁজ হওয়া ঐ ছাত্রদের পরিবারে খবর দিলে পরিবারের সদস্যরা সোমবার রাতে রুপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আসেন। পরে তিন মাদ্রাসা ছাত্রকে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে নিরাপদে রেখে ৩ ছাত্রকে পরিবারের কাছে পৌছে দেওয়ায় পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পরিবারে সদস্যরা। আব্দুল আলিমের পিতা সেলিম হোসেন বলেন, আমরা খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পুলিশ আমাদের সন্তানদের যেভাবে ভালবাসা ও সম্মানের সাথে উদ্ধার করে আমাদের কাছে দিয়েছে তাতে খুবই খুশি হয়েছি। পুুলিশকে এই আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: