টাকার বিনিময়ে হাইব্রিডদের পদ প্রদান ও দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক কাজী আব্দুস সোবহান।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে কাজী আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি ও পদ ভাঙিয়ে অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
শনিবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, টাকার বিনিময়ে আমি এ পদ কিনিনি। কাউকে টাকার বিনিময়ে পদ দিচ্ছি ও না।
এসময় তিনি দাবি করেন, ফরিদপুরের বিভিন্ন থানায় আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের বিভিন্ন কমিটি গঠন করায় একটি কুচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি করছি। অমরা কোন অপরাজনীতি করছি না। সেনাবাহিনী থেকে তার চাকরি চলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নিজেকে সেনাবাহিনীর এনসিও (নন কমিশন অফিসার) উল্লেখ করে কাজী আব্দুস সোবহান জানান, তিনি নিজে স্বেচ্ছাতেই সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত বলে জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সইস্বাক্ষর জাল করে বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে যেয়ে সাজা খাটার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিও সত্য নয়। তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাও তদন্ত করছে। তারা আমার ইন্টারভিউও নিয়েছে।
তার বিরুদ্ধে নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ দাখিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আমাকে তেমনভাবে চিনেননা। তিনি কিভাবে আমার সম্মন্ধে জানবেন। নিজ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আপনাকে চিনেনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি তেমন একটা সময় এলাকায় থাকিনা তাই তারা আমাকে সেভাবে চিনে উঠতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো, আব্দুস সোবহান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া এবং সালথার সভাপতি দেলওয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির গত২৯ মে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে কাজী আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে তারা অভিযোগ করেন, নানা অপকর্মের কারণে কাজী আব্দুস সোবহান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন। চাকরিচ্যুতির পরও তিনি বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে শতকোটি টাকার বিদেশি পণ্য বিনা শুল্কে খালাস করেন। পরে স্বাক্ষর জালিয়াতি ধরা পড়ায় তিনি এক বছর কারাবরণ করেন। জাল ডলার ব্যবসা, চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার নামে। তিনি সম্প্রতি অর্থের বিনিময়ে জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক পদটি বাগিয়েছেন। পদ পেয়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি করার নামে সুসংগঠিত দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: