প্রেমের ফাঁদে পেলে এক কিশোরীর (১৩) সাথে শারিরীক সর্ম্পকের লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে আজমাতুল (১৬) নামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। অভিযুক্ত কিশোর উপজেলার মদন সদর ইউনিয়নের বাগদাইর গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার বিকেলে মদন পৌরসভার মাস্টার পাড়া এলাকায় এক শালিসী বৈঠকের মাধ্যেমে এই সিন্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এ দিকে ওই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ভুক্তভোগী কিশোরী।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার ঢাকায় বসবাস করেন। আর ওই কিশোরী বাড়িতে থেকে মদন পৌরসভার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনিতে লেখাপড়া করছে। অভিযুক্ত আজমাতুল স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্র। গত সাত মাস আগে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দিয়ে ওই কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে পেলে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই কিশোরীর সাথে একাধিকবার শারিরীক মিলামেশা করে আজমাতুল। গত এক সপ্তাহ আগে বিয়ে করবে বলে ওই কিশোরীকে পৌর সদরের নিজ বাসায় নিয়ে যায় সে। ঘটনাটি পরিবারের লোকজন মেনে নেওয়ায় ভুক্তভোগী কিশারী ঢাকায় চলে যায় তার পরিবারের লোকজনের কাছে। সেখান থেকে বুধবার (১ জুন) ফের ওই কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে নিজের বাসায় নিয়ে আসে আজমাতুল। বিয়ে না হওয়ায় দুই জনেই আশ্রয় নেয় মাস্টার পাড়া এলাকায় একটি বাসায়। এ ঘটনায় কয়েক দফা শালিসী বৈঠক হলে শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এতে ছেলে পক্ষকে ৪৫ হাজার টাকা জরিামানা করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, স্কুলে যাওয়া আসার পথে আজমাতুল আমাকে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দিত। আমি রাজি না হওয়ায় দুই বার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে। কয়েকবার আমার সামেন হাত কেটে ফেলেছে। এসব দেখে ভয় পেয়ে আমি তার সাথে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়ি। এর পর থেকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার সাথে একাধিকবার শারিরীক মিলামেশা করেছে আজমাতুল।
সে আরো জানায়, এক সপ্তাহ আগে জোড়পূর্বক আমাকে তার বাসায় নিয়ে বিয়ের কথা বলে। তার পরিবারের লোকজন আমাকে ভয় দেখায়। খবর পেয়ে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে ঢাকা নিয়ে যায়। বুধবার আবার আমাকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসে সে। বিয়ের জন্য তার বাসায় নিয়ে গেলে তার মা আমাকে মারপিট করে। পরে আমাকে নিয়ে মাস্টার পাড়ায় একটি বাসায় আশ্রয় নেয় আজমাতুল। আজকে (শুক্রবার বিকেলে) আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব দরবার করে আমার ইজ্জতের মূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। আমার মান-ইজ্জত সব নষ্ট করে টাকা দিয়ে ধামা চাপা দিতে চাইছে। আমি এর বিচার চাই। নয়তো গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করবো।
কিশোরীর বাবা জানান, আমরা গরীব মানুষ। আমার মেয়েটির মান-সম্মান সব শেষ হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান সাহেব দরবার করে মীমাংসা করছে, তাই না মেনে উপায় নাই। জরিমানার ৪৫ হাজার টাকা চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে জমা রয়েছে। বলেছে ৩ দিন পর তার কাছ থেকে টাকা আনতে হবে।
আজমাতুলের পরিবারের লোকজনদের কাছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি তারা।
এসব কিছু অস্বীকার করে মদন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এমন কোন ঘটনার মীমাংসা আমি করিনি।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: