গলায় ওড়না পেছিয়ে স্ত্রীকে হত্যা; হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন স্বামী

আরমান জাহান চৌধুরী | ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৭:৪৪

প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মদনে যৌতুকের জন্য মারধর করে এক গৃহবধুকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধুর ভাই বাদী হয়ে তার ভগ্নীপতিসহ কয়েকজনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত গৃহবধু সাজেদা আক্তার (২৫) কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের বাইগুনি গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে সাজেদা আক্তার ফাঁসিতে ঝুলে আত্মত্যার চেষ্টা করেছে এমন তথ্য দিয়ে মদন হাসপাতালে ভর্তি করাতে আসে তার স্বামী হুমায়ূনসহ স্বজনরা। গৃহবধু সাজেদা আক্তার মারা যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে তার লাশ হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে যায় তার স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকায় হুমায়নের বড় ভাই আবুল বাশারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলা সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার মদন সদর ইউনিয়নের মৃত আলী হোসেন এর ছেলে হুমায়ূন এর সাথে ৯ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় সাজেদা আক্তারের। তাদের ৬ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ৩ বছর আগে সাজেদার বাবার নিকট হতে ২ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে মালয়েশিয়া যান হুমায়ূন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছুটি পেয়ে বাড়িতে আসেন স্বামী হুমায়ুন। আবার মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য যৌতুক দাবি করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। যৌতুকের জন্য শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে হুমায়ুন। এ নিয়ে এক মাস আগে বাবার বাড়িতে চলে যান সাজেদা আক্তার। পরে স্বামী হুমায়ূনসহ কয়েকজন শালিস বৈঠক করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বসত ঘরে গলায় ওড়না পেছিয়ে সাজেদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বামী হুমায়ূন ও স্বজনরা। রাতেই স্বামী হুমায়ূন ও স্বজনরা সাজেদা ফাসিঁতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে মদন হাসাপাতালে নিয়ে আসেন। মদন হাসাপাতালের জরুরী বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার আসাদ সাজেদাকে মৃত ঘোষণা করেন। মারা যাওয়ার খবর শুনেই স্বামী হুমায়ূন স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ আসলে প্রতিবেশী ও স্বজরাও সটকে পড়েন।

এ ব্যাপারে হুমায়ূনের বড় ভাই আবুল বাশার বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের বউ সাজেদা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে খবর শুনে হাসাপতালে আসি। হুমায়ূন তার শ্বশুর বাড়িতে খবর দিবে বলে চলে যায়। পরে পুলিশ আমাকে আটক করলে সবাই পালিয়ে যায়।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ ঘটনায় গৃহবধুর বড় ভাই তার ভগ্নীপতিসহ আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এজহার নামীয় আসামি আবুল বাশার কে রাতেই গ্রেপ্তার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধুর লাশ ময়নাদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: