বালিয়াডাঙ্গীতে লোকসানের মুখে আলুচাষিরা

আনোয়ার হোসেন আকাশ, ঠাকুরগাঁও | ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:৫৩

ছবিঃ সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আগাম জাতের আলু বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে। আলুর দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ও দুওসুও ইউনিয়নের কয়েকজন আলু চাষি জানান, গেল বছর আগাম জাতের আলু বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চলতি বছর সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজিতে। যাদের ভালো ফলন হয়েছে তাঁদের কোনোমতে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। যাদের ফলন কম হয়েছে তাঁদের লোকসান হচ্ছে। তবে বাজার দর ৩০ টাকা কেজি হলেই কোনো কৃষকের লোকসান গুনতে হবে না বলে আশা আলু চাষিদের।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গেল বছরের তুলনায় প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি। তবে মৌসুমের শুরুতে অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় ৫০ হেক্টর জমির আলুখেত নষ্ট হয়েছে।

বড়বাড়ী ইউনিয়নের রুপগঞ্জের গ্রামের আলু চাষি সমশের আলী জানান, ৩০ শতক জমিতে আগাম জাতের আলু চাষে ব্যয় হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে ৩৭ মণ আলু, বাজার মূল্য ১৬ টাকা কেজি দরে প্রায় ২৪ হাজার টাকা। তাঁর ১ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।

বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আলুর বীজের দাম কম হলেও সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ বেশি। শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। প্রতি একরে আলু চাষে ব্যয় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। তবে চলতি বছর অসময়ে বৃষ্টিতে যেসব কৃষকের আলুর ক্ষতি হয়েছে। তাদের পুনরায় আলু চাষে ব্যয় বেড়েছে প্রতি একরে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

আলু ব্যবসায়ী দুলাল চৌধুরী ও আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার ১৭ থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছেন দুই গাড়ি। সপ্তাহ খানিক ধরে ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে আলু কিনছেন তাঁরা। আলুর দাম বাড়তে পারে বলে আশা করছেন তাঁরা।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় প্রতিবেদককে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির ফলন ভালো হয়েছে এবং একসঙ্গে বাজারে এসেছে। এ জন্যই আলুর দাম একটু কম। তা ছাড়া অসময়ে বৃষ্টির কারণে আগাম জাতের আলুর কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। আশা করছি ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আগাম আলুর চাহিদা বাড়বে। চাহিদা বৃদ্ধি হলে দাম বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: