নতুন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ৭৫৩ একরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন জীবন শুরু হয়েছে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শিক্ষার্থীদের। আজ মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে পৃথক পৃথকভাবে পরিচিতি ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাস শেষে সবুজ মতিহারে বন্ধুদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে নবীন শিক্ষার্থীরা।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সাবাস বাংলাদেশ, বদ্ধভূমি স্মৃতিসৌধ, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেট চত্বর, ইবলিশ চত্বর, বিভিন্ন বিভাগের সামনে ফুল হাতে দলবেঁধে আছে নবীন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা একে অপরের সাথে পরিচিত হচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছে। কেউবা বিভাগের বড়ভাইদের সাথে পরিচিত হচ্ছে। কেউ আবার ব্যস্ত ছবি তোলায়। নতুন বন্ধু পেয়ে ক্যাম্পাসে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে অনেকেই। সবমিলিয়ে সবুজ মতিহার যেন তার নবীন শিক্ষার্থী পেয়ে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে।
ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, 'বিভাগের স্যারদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ অনেক ভালো লেগেছে। শ্রেণি কক্ষটাও অনেক সুন্দর ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন এসেছি। পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারবো কিনা, সেই ভয় কাজ করছে মনে।'
অ্যাপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী সুমন রাহাত বলেন, 'আমার বাবা একজন কৃষক। বাবার সপ্প ছিল আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। সে স্বপ্ন পূরণ করেছি আমি। এখানকার পরিবেশ আমার খুব ভালো লেগেছে। আর নতুন বন্ধু পেয়ে, স্যারদের পেয়ে খুব ভাল লাগছে। তবে কিছুটা ভয়ও কাজ করছে মনে।'
মার্কেটিং বিভাগের ভর্তি হওয়া সুদীপ্ত সরকার জানান, 'বিশ্ববিদ্যালয় আসতে গিয়ে জোহা চত্বরটা অনেক সুন্দর লেগেছে আমার। কিছু বড়ভাইদের সাথে কথা বলেছি। প্রথমে কিছুটা ভয় লাগছিল কথা বলতে। পরে ভাইদের সাথে কথা বলে অনেক ভালো লেগেছে বলে জানান তিনি।'
এছাড়া, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায় নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকদেরও দেখা মেলে। তেমনি একজন অভিভাবক মার্কেটিং বিভাগের কানিজ আফরোজের মা। তিনি বলেন, 'আমার মেয়ে এত বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে। এতে আমার খুব ভালো লাগছে। দোয়া করি মেয়ে এখানে ভালো থাকুক, ভালো করে পড়াশোনা করুক।'
লোক প্রশাসন বিভাগের রেজওয়ান শারমিনের মা জানান, 'খুব ভালো লাগছে মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছে দেখে। তবে র্যাগিংয়ের ভয়ে কিছুটা শঙ্কিত। প্রবীণরা যদি তাদেরকে সাদরে গ্ৰহন করে নেয়, সেটা অনেক ভালো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ভালো না অনেকেই বলে। মেয়ের সাথে দুই-চারদিন থাকা লাগবে মনে হচ্ছে। এখন মেয়ে খুব ভয়ে ভয়ে আছে। কীভাবে থাকবে নতুন পরিবেশে এই চিন্তায় আছি আমি।'
এদিকে কোন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নবীন শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে এবং তা প্রমাণিত হলে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: