খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর পূর্বাপর ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন সংগঠনটি।
শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, বছরের পর বছর প্রতিটি ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের দৌরাত্ম্য নতুন কিছু নয়। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত হল প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকা পালন করেন। কোন ছাত্র হলে কোন রুমে থাকবে এইগুলো সবই ঠিক হয় ছাত্র সংগঠনের নেতা নেত্রীদের মর্জি মাফিক। এই প্রক্রিয়াতে চলে গণরুম আর গেস্টরুম নির্যাতন। হলের একটা সিটের বিনিময়ে কিনে নেওয়া হয় শর্তহীন রাজনৈতিক আনুগত্য আর ক্যাডার নামক রাজনৈতিক গুণ্ডা বানানোর লাইসেন্স।
তারা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো পেশী শক্তির মাধ্যমে দখলে রাখতে চেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, বরং শাসক দলের কাছে এটি মূল্যবান পেশী শক্তির আধার হিসেবে, রাজনৈতিক আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল শক্তি হিসেবে।
অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর পর কুয়েট বন্ধ করার সমালোচনা করে তারা বলেন, কুয়েট কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত কোন পথে হাঁটছেন তা আমরা নিশ্চিত নই। মৃত্যুর প্রতিবাদে যখন কুয়েট উত্তাল হয়ে ওঠে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তড়িঘড়ি করে কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে এবং ছাত্র ছাত্রীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। এটি করার একটা উদ্দেশ্য হয়তো ছাত্র আন্দোলন স্তিমিত করে ফেলা। আমরা চাই কুয়েট কর্তৃপক্ষ কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে এই অপমৃত্যুর একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনবে।
উল্লেখ্য, কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গত ৩০ ডিসেম্বর দুপুর ৩টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি কুয়েটের লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন।
অভিযোগ আছে, হলের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচন নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনার দিন দুপুরে অধ্যাপক সেলিমের ওপর মানসিক নির্যাতন চালান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মৃত্যুর খবর আসে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: