ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, আসন্ন ছাত্রলীগের হল সম্মেলনে অপরাধী, অনুপ্রবেশকারী, সুনাম ক্ষুণ্নকারী, নেতিবাচক রেকর্ডধারীরা যেন কোনোভাবেই নেতৃত্বে না আসতে পারে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই, অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত কারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটিতে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের হল সম্মেলন উপলক্ষে শনিবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের হল সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৮ নভেম্বর সম্মেলন শুরু হবে। এর মাধ্যমে ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দেওয়া হবে। ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল। দীর্ঘ সময় পর সম্মেলনের ঘোষণা আসায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। হলে হলে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সাংগঠনিকভাবে নিজেদের তৈরি করতে পদপ্রত্যাশীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াটি বন্ধ ছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ইতোমধ্যে হল সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছি। সম্মেলনের প্রস্তুতিও এগিয়ে চলছে। আমরা চাই, এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণের উৎসবে মুখরিত হোক, নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত থাকুক, সঙ্গে ক্যাম্পাসও প্রাণবন্ত থাকুক।
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ছাত্রলীগের ভূমিকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সংকটের বিষয়গুলো মাথায় রেখে এবারের সম্মেলনে আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করা হবে। আগামীতে কোন কোন বিষয়ের ওপর ফোকাস করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে, সেগুলোও উল্লেখ থাকবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অতুলনীয় অগ্রযাত্রা, তার নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মের যে একতা— সেই সুরকে প্রতিধ্বনিত করে আমরা একটি স্লোগান নির্ধারণের চেষ্টা করব।
ঢাবি ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, সম্মেলন নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির প্রস্তুতি সভা ও বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে। এর বাইরেও মঞ্চসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়া, কীভাবে সম্মেলন হবে— সেসব নির্ধারণে আমরা পরিকল্পনা করছি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মরা যখন শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আনুষ্ঠানিকভাবে এটি চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমরা আশা করছি তিনি থাকবেন। তিনি সম্মেলনে থাকলে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারও অনুপ্রাণিত হবে।
এবারের সম্মেলনে নতুনত্ব কিছু থাকছে কি না এবিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সম্মেলনে নতুনত্ব তো অবশ্যই থাকবে। করোনা পরিস্থিতির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সম্মেলন অবশ্যই বর্ণিল হবে, সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে। এর বাইরেও আমাদের পলিটিক্যাল মোটো (রাজনৈতিক লক্ষ্য) থাকবে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা এবং তাদের অধিকার আদায় নিয়ে আলোচনাই হবে সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য। এসব বিষয় নির্ধারণ হচ্ছে। আমরা মনে করি, সম্মেলনের ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে নতুনত্ব আসবে।
সম্মেলনে নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যেহেতু দীর্ঘ সময় পর কমিটিগুলো হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি নেতৃত্ব বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায়। দীর্ঘ সময় ধরে যারা নিষ্ঠার সঙ্গে পরিশ্রম করেছেন, সংগঠনের সঙ্গে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে রয়েছেন, আত্মত্যাগ করেছেন, আদর্শিকভাবে আপসহীন লড়াই-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়— তাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে চাই। অপরাধী, অনুপ্রবেশকারী, সুনাম ক্ষুণ্নকারী, নেতিবাচক রেকর্ডধারীরা যেন কোনোভাবেই নেতৃত্বে না আসতে পারে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই, অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত কারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটিতে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: