জাহাধীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৩—২৪ সেশনে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তিতে ‘শিক্ষার্থী কল্যাণ ফি’ শিরোনামে ছয় হাজার টাকা এককালীন ফি পুনর্বহাল করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ফি আদায়কে ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এর আগে, একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার ‘শিক্ষার্থী কল্যাণ ফি’ আদায়ের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেশের অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা গ্রহনের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। স্বল্পব্যায়ে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থাপিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বৈশিষ্ট্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন ঘটে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম বাবদ আদায়কৃত অর্থের পরিমানকে দেশের স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনুকূলে নির্ধারন করার মাধ্যমে। কিন্তু অতিরিক্ত ফি নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা লাভের অধিকার বঞ্চিত করবে।
ইতোপূর্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ফি আদায় করা হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বে এই নীতির ব্যাত্যয় ঘটেছে 'বিভাগ উন্নয়ন ফি' শিরোনামে ৬০০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করার মধ্য দিয়ে। ২০১৯ সালে দীর্ঘ ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিল করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষাকে পুনরায় শিক্ষার্থীদের নাগালে নিয়ে আসা হয়।
শিক্ষার্থী কল্যাণ ফি পুনর্বহাল করাকে ‘দুঃখজনক’ দাবি করে তারা বলেন, শিক্ষার্থী কল্যান ফি শিরোনামে ছয় হাজার টাকার এই এককালীন ফি পুনর্বহাল করা হয়েছে। দেশের স্বপ্ন ও নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা লাভের অধিকারের স্বার্থে আমরা, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করছি।
তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ভিসি মহোদয়কে জানালে তিনি আমাদের ডীন কমিটির সাথে যোগাযোগ করতে বলেন এবং পরামর্শ মোতাবেক আমরা ডীন কমিটির সভাপতি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করি। ডীন কমিটির সভাপতি দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ডীনদের সমন্ময়ে জরুরী মিটিং আহবানের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশা করছি যে, উক্ত মিটিংয়ে শিক্ষার্থী কল্যান ফি বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। যদি এই 'শিক্ষার্থী কল্যাণ ফি' বাতিল করা না হয় তবে আমরা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো।
আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, আমরা ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আসন্ন ঈদের বন্ধের পরই নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। আমরা আশঙ্কা করছি এ ব্যাপারে প্রশাসন খুব দ্রুত তাদের অবস্থান পরিষ্কার না করলে নিম্ন আয়ের অনেক শিক্ষার্থী তাদের উচ্চশিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। তাই অবিলম্বে আমরা এ ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাই।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: