প্রক্টর-প্রভোস্টকে বাঁচাতে মরিয়া ছাত্রলীগ

জাবি প্রতিনিধি | ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০৬

ছবি-সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলমান ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের ঘোষণা আসতে পারে যেকোন সময়। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে প্রক্টর ও সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্টকে অপসারণের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছেন উপাচার্য। তবে, প্রক্টর ও প্রভোস্টের পদত্যাগ ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ৩০-৪০ টি মোটর সাইকেল যোগে উপাচার্যের বাসভবনে যান ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সেক্রেটারি লিটনের প্যানেলের বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা। এসময় সিনিয়র নেতাকর্মীরা বাসভবনের অভ্যন্তরে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। পরে দীর্ঘ দুই ঘন্টা মিটিংয়ের পর রাত সাড়ে নয়টায় তারা বের হয়ে আসেন।

মিটিংয়ে উপস্থিত এমন এক ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মীর মশাররফ হলের প্রভোস্ট স্যারের বিষয়ে আমরা আমাদের কথা বলেছি। সাব্বির স্যার সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন। মীর মশাররফ হলের অছাত্রদের বের করা থেকে শুরু করে গণরুম বিলুপ্তিসহ সার্বিকভাবে সবকিছুতেই সাব্বির স্যার সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাব্বির আলম স্যার তো নিজে ছাত্রলীগ করা মানুষ। তিনি তো প্রশাসনের পক্ষেই কাজ করছেন। তাহলে কি অপরাধে তাকে হলের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হবে। তাহলে এ ঘটনায় কে লাভবান হচ্ছে?

এসময় অপর এক ছাত্রলীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্যাম্পাসের সব ঘটনায় ছাত্রলীগকেই কেন বলির পাঁঠা হতে হবে? আলবেরুনি হলের প্রভোস্ট জুলকারনাইন স্যার, এমএইচ হলের প্রভোস্ট সাবিব্বর স্যার, প্রক্টর ফিরোজ স্যার সবাই ছাত্রলীগ করা মানুষ। বেছে বেছে তাদেরকেই কেন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। এখানে কার লাভ হবে?

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমরা মূলত গিয়েছি উপাচার্যের সাথে ঈদ পূর্ববর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎ করার জন্য। ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্যের সাথে আলাপ হয়েছে। প্রক্টর-প্রভোস্টের ইস্যুতে আমাদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল, যদি তারা সত্যিই দোষী হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হোক। তবে সব ঘটনায় শুধু ছাত্রলীগ করে আসা শিক্ষকদের দোষী করা হচ্ছে। বিষয়টি যেন উপাচার্য খেয়াল রাখেন। এতে আমাদের নিজেদের ক্ষতি হবে।

এসময় বৈঠকে অধ্যাপক আলমগীর কবির, অধ্যাপক শাহেদ রানা, অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন, অধ্যাপক সাব্বির আলম, অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, অধ্যাপক বশির আহমেদ, অধ্যাপক আওলাদ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক মনির সিকদার, রেজিস্ট্রার আবু হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণকান্ডে প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হল প্রভোস্ট সাব্বির আলমের পদত্যাগের দাবি জানায় নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। প্রক্টর-প্রভোস্টের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে টানা তিনদিন প্রশাসনিক ভবন অবরোধের তৃতীয় দিনে উপাচার্য তাদের মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে তারা। উপাচার্যের আশ্বাস অনুযায়ী, ১৮ মার্চ দুপুরের মধ্যে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ সাব্বির আলম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অব্যাহতি প্রদান করবেন। এ দাবি মানা না হলে ১৮ তারিখ দুপুরের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হয় তাহলে সামনে আমাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণার করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: