অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অনেকটা হল বন্দী রয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন। বৃহস্পতিবার জাবি উপাচার্যের সাথে ঢাকা-১৯ (সাভার ও আশুলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সাক্ষাৎ করতে আসলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এদিন হাবিবুর রহমান লিটনকে ছাড়াই সাংসদ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে তার অনুসারীরা। এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবাঞ্ছিত হওয়ার পর থেকে হাবিবুর রহমান লিটন হল থেকে বেরই হতে পারেননি। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি হাবিবুর রহমানের লিটনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারই অনুসারীদের বড় একটি অংশ।
জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবস্থান করছেন। অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়ার পর থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাকে কক্ষ থেকে বের হতে দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়ার পর থেকে লিটন ভাই খুব প্রয়োজন ছাড়া কক্ষ থেকে বের হননি। আমরা আশঙ্কা করছি ভাই এখন হল থেকে বের হলে তিনি আর হলেই ঢুকতে পারবেন না।’
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। উপাচার্যের কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর নেতাকর্মীরা সাংসদের সাথে উপাচার্যের সাথে কার্যালয়ে যেতে চাইলে উপাচার্য ও প্রক্টরের নিষেধের কারণে সবাই ভেতরে যেতে পারেননি। তবে এসময় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটনের বিদ্রোহী অনুসারীদের পক্ষে সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার ও সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এছাড়া সৌজন্য সাক্ষাৎ পরবর্তী সাংসদের সাথে সাক্ষাত করেন।
সাংসদের সাথে দেখা করতে না আসার বিষয়ে জানতে হাবিবুর রহমান লিটনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে তার হলের এক নেতা জানান, ‘বুধবার রাতে হলের নেতাকর্মীদের সাথে সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের সাথে দেখা করার বিষয়ে আলোচনা করেন। তবে এতে বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা করে অধিকাংশ নেতাকর্মীই দ্বিমত পোষণ করেন ও তার সাথে যেতে অস্বীকৃতি জানান।’
সাধারণ সম্পাদককে ছাড়া সংসদ সদস্যের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘আজকে শুধু একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ থাকার জন্য আসতে পারে নি। এটা স্বাভাবিক। এটা পরিকল্পিত কোনো প্রোগ্রাম না। এমপি মহোদয়ও হুট করে এসেছেন। আমরা যে যার জায়গা থেকে এসেছি। এটা ছাত্রলীগের কোনো প্রোগ্রাম না।’
এসময় সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। এখানে যিনি এসেছেন সাভারের মাননীয় সংসদ সদস্য তিনিও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করেন। সেই জায়গা থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসা খুব স্বাভাবিক। সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় তিনি আসেননি। তিনি এটা মেনে নিয়েছেন। আর অবাঞ্ছিত হওয়ার পর তা না আসাই স্বাভাবিক ছিল।’
এছাড়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদককে যে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এটা মাত্রই জানতে পারলাম আপনাদের থেকে। এটা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।’
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: