জাবি ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, সাক্ষাৎকারে এসে আটক

আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | ২৩ আগষ্ট ২০২২, ০৫:৩২

সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ভর্তিপরীক্ষায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত 'বি' ইউনিটের পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে (প্রক্সি) মেধাতালিকায় ১১৬ তম স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হন সৈয়দ আব্দুস সামি নামের এক ভর্তিচ্ছু। তবে সাক্ষাৎকার দিতে এসে আটক হয়েছেন ওই ভর্তিচ্ছু।

সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ভাইভা বোর্ডে থাকা শিক্ষকদের সন্দেহ হলে ওই ভর্তিচ্ছুকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে নিরাপত্তা শাখার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সামি প্রক্সির বিষয়টি স্বীকার করেন।

সামি বলেন, এলাকার পরিচিত এক ছেলের মাধ্যমে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিলের সাথে প্রক্সির বিষয়ে কথা হয়। শাকিল পরবর্তীতে বুয়েট পড়ুয়া মাহফুজ নামে এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে প্রক্সি দেওয়ার ব্যবস্থা করে। শাকিলের মাধ্যমে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা চুক্তি হয়। ভর্তিপরীক্ষার আগে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ভাইভা শেষে বাকি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মাহফুজকে দেওয়া হবে বলে ঐ টাকা শাকিল জমা নেয়।'

সামি আরও বলেন, 'সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারিতে পরীক্ষার আসন পড়ে। আমি পরীক্ষা দেইনি। তবে মাহফুজ নিজে পরীক্ষা দিয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত জানি না। মেধাতালিকায় আমার ১১৬তম স্থান আসে। মাহফুজ ভাইয়ের অধিনে আরও তিন-চারজন এরকম চুক্তি করেছে বলে জানি। এই পুরো বিষয়ে সব ধরণের ঝুঁকি শাকিল বহন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।'

এছাড়াও সামি জানান, তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ১২ নং আছিম আছিম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং শাহাবুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকবার হোসেন বলেন, 'ওই শিক্ষার্থীর হাতের লেখার সাথে তার ভর্তিপরীক্ষার খাতার (ওএমআর) লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে সন্দেহ করা হয় এবং প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, 'প্রক্টর অফিস থেকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ওই শিক্ষার্থী প্রক্সি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে। তার মোবাইল-ফোন জব্দ করা হয়। এসময় জালিয়াতি চক্রের কয়েকজনের সংশ্লিষ্টটার তথ্য পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।'


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: