জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩৯তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বির্তকের মুখে পড়া অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারকে আচার্যের মনোনীত ক্যাটাগরিতে সিন্ডিকেট সদস্য করতে চ্যান্সেলর এর কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২১ জুন উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আবু বকর ছিদ্দীককে (চ্যান্সেলরের সচিব হিসেবে) উপাচার্য অফিসের ৭২৯ নং ক্রমের এ চিঠি পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ২২ ( ১ ) ( g ) উপধারা অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০ জুন ২০১৮ তারিখের ৩৭.০০.০০০০,১১৮.৪৬.০২১.৯৯.২০৯ নং চিঠির সূত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে মনোনীত দুইজন সদস্যের মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে । তাঁর স্থলে উপর্যুক্ত ধারানুযায়ী দুইজন সদস্য মনোনয়ন করা প্রয়োজন । চিঠিতে চারজন ব্যক্তির নাম পাঠানো হয়। এতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড . অজিত কুমার মজুমদার ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড . মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড . মোঃ নূহু আলম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড . এস . এম . খোরশেদ আলম।
গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের অবসরের বয়স সংক্রান্ত ইস্যুতে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশব্যাপী নিন্দা ও সমালোচনার মুখোমুখি হন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার।
আচার্যের মনোনীত ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক অজিত কুমারের নাম পাঠানোর খবরে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেষ্ঠ অধ্যাপক ও শিক্ষক নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের এক জেষ্ঠ নেতা বলেন, ’অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার সেদিন সিনেটে মুক্তিযোদ্ধাদের ঢালাওভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার মধ্যদিয়ে মূলত মুক্তিযুদ্ধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস দেখিয়েছেন। দীর্ঘদিন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ব্যানারে রাজনীতি করে আসা একজন শিক্ষকের কাছে এরকম মন্তব্য বিস্ময়কর। এমতাবস্থায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় আচার্যের কাছে আবেদন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধকারী ব্যক্তি যেই হোক না কেন তাকে এ পদে মনোনীত করা না হয়।’
শিক্ষক সমিতির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ’মাননীয় আচার্যের মনোনীত সদস্য হিসেবে সম্মানিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের আসা উচিত। সেখানে যাদের নাম পাঠানো হয়েছে তাদের প্রায় সবাই বিতর্কিত। যদিও চিঠি আগে পাঠানো হয়েছে আশা করি মাননীয় আচার্য এটি নাকচ করে পুনরায় তালিকা চেয়ে পাঠাবেন ।‘
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: