আগামী ১৭ই ফেব্রুয়ারি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( হাবিপ্রবি ) গণমাধ্যম কর্মীদের একমাত্র সংগঠন হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এছাড়া চতুর্থ কার্যনিবাহী কমিটির নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ, জমাদান এবং প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশী সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
২০১৭ সালের ১১ই নভেম্বর যাত্রা শুরু করা এ গণমাধ্যম সংগঠনটি নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৫ম বর্ষে পা দিয়েছে। শুরুর দিকে কিছুটা সমস্যা থাকলেও সময় যতো গড়িয়েছে সংগঠনের পুরুত্ব ততো বেড়েছে। বর্তমানে সংগঠনে কয়েকটি লেয়ারে সদস্য রয়েছে। আগ্রহীদের নিকট থেকে সদস্যফর্মের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ জনকে বাঁছাই করা হয় যারা সাধারণ সদস্য পদ লাভ করে। এরপর তাদের আগ্রহের যায়গার উপর ভিত্তি করে তাদের উক্ত বিষয়ের উপর সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালার আয়োজন করা হয়। দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে চলে এ আয়োজন।
এরপর তাদের কাজের মান, কর্মদক্ষতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রায় ৫-৭ জনকে সদস্যপদের জন্য সুপারিশ করা হয়। সেখান থেকে ভোটিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট মূল কমিটি অর্থাৎ কার্যনির্বাহী কমিটিতে আসার সুযোগ পান এবং নীতিনির্ধারণী সভার সদস্যপদ লাভ করে নেতৃবৃন্দ ।
বর্তমানে সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে কাজ করছেন একদল তরুণ, উদ্যমী সাংবাদিক। যারা দেশের প্রথম সারির মিডিয়া হাউজ যেমন: দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক মানবকন্ঠ, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ, দৈনিক সময়ের আলো, দৈনিক খোলা কাগজ, দৈনিক দেশ রুপান্তর, দৈনিক আজকের দর্পণ, দৈনিক অধিকার নিউজ, দৈনিক যুগের আলো, বাংলা ট্রিবিউন, দৈনিক যায় যায় দিন, দৈনিক গনমানুষের আওয়াজ, ক্যাস্পাস লাইভ, বিজয় বাংলাদেশ, একুশে টেলিভিশন, ঢাকা পোস্ট, দৈনিক আমার সংবাদ, ডেইলি ক্যাম্পাস, দৈনিক নয়া শতাব্দী, শেয়ার বিজ, জাগো নিউজ, দৈনিক জনতার ইশতেহার, ডেইলি বাংলাদেশ, দৈনিক বাংলাদেশের খবর, দৈনিক সকালের সময়, দ্যা বাংলাদেশ ট্যুডে, প্রভৃতি। এছাড়াও বেশ কয়েকটি মিডিয়ার শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছেন সমিতির কয়েকজন সদস্য, যারা শীঘ্রই নিয়োগলাভ করবেন বলে জানা যায়।
বিদায়ী কমিটি অর্থাৎ মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত ও আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে চালিত তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি দায়িত্বলাভ করে করোনার বন্ধের মধ্যে এবং কমিটির মেয়াদও শেষ হয় করোনার বন্ধেই। তা সত্ত্বেও সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নতুন এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েও সমিতি বেশ প্রশংসনীয় কাজ করে। এর অংশ হিসাবে করোনায় শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের প্রসঙ্গ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আলোচনায় রাখা এবং স্টেকহোল্ডারদের আলোচনায় বসার জন্য তাগাদা দেওয়া, বোর্ড বৃত্তি প্রাপ্তিদের ক্রিডিট ফি মওকূফে সহায়তা করা, হাবিপ্রবির স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কম করানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ, শিক্ষার্থীদের ভর্তিকার্যক্রমে সহায়তা, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আবাসিক মেসের বাণিজ্যিক মিটার আবাসিককরণে ভূমিকা রাখা, অকার্যকর ফি মওকূফে ভূমিকা পালন, করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি সহ বহুমুখী কাজে শিক্ষার্থীদের প্রসংশা কুড়িয়েছে সংগঠনটি।
তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বিদায়ী সভাপতি মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত বলেন, " আলহামদুলিল্লাহ। বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়া নিজ দায়িত্বটুকু যথাযথ ভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। সবাই পাশে থেকে সাপোর্ট দিয়েছে বলেই সুষ্ঠু ভাবে সব কাজ শেষ করতে পেরেছি। সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে ভিডিও নিউজ প্রেজেন্টেশনের যাত্রা শুরু করা হয়েছে। এছাড়া তিন মাস পরপর সেরা রিপোর্টার নির্বাচন কার্যক্রম শুরু করেছি। পাশাপাশি একাডেমিক ভাবে ভালো ফলাফল করতে উৎসাহ দেয়ার জন্য মেধা পুরুষ্কার দেয়া শুরু করেছি। প্রথমবার সংগঠন থেকে অভিজ্ঞতা সনদপত্রের ব্যবস্থা করেছে তৃতীয় কার্যনিবাহী কমিটি। হাবিপ্রবিসাস প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বারেই প্রথম বৃহৎ পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি একটি বনভোজনে অংশ নেয় সংগঠনের সদস্যবৃন্দ। দক্ষ ও সময়োপযোগী সাংবাদিক তৈরির লক্ষ্যে দুইটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। অনারবোর্ড সহ চেয়ার ও ডেক্স বর্তমান কমিটিতে সংযোজন করা হয়েছে। যখন নেতৃত্বে আসি তখন মাত্র কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা ছিলো। বর্তমানে হাবিপ্রবিসাসে দেশের প্রথম সারির প্রায় সব মিডিয়ায় আছে। অন্যান্য সংগঠনের ন্যায় হাবিপ্রবিসাস বর্তমানে সম্মানজনক অবস্থানে পোঁছে গেছে। আশা করি আগামীদিনে যারা নেতৃত্বে আসবে তারা সংগঠনকে আরো ভালো জায়গায় নিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা করি "।
উল্লেখ্য যে, সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে গঠনমূলক সংবাদ প্রকাশ করে এগিয়ে যাক হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি এমনটাই প্রত্যাশা করেন সংগঠনটির শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ। নতুন নেতৃত্বে বিকাশিত হোক হাবিপ্রবিসাস, অর্জনের খাতা হোক আরো মবজুত প্রত্যাশা সকলের।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: