হিমেল নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ৬ দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের

রাবি প্রতিনিধি | ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ২২:৪০

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় ছয়টি দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতের দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকালে তারা এসব দাবি জানান। আন্দোলন চলাকালে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার প্রক্টরকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, নিহতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতের বোনকে চাকরি দিতে হবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাল্টাতে হবে, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং হিমেল নিহতের ঘটনাকে হত্যাকান্ড হিসেবে বিচার করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নিহতের লাশ সামনে নিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য দাবিগুলোর বিষয়ে কথা বলার জন্য বিকাল ৪টায় সাবাস বাংলাদেশ মাঠে উপাচার্যের সঙ্গে আলাপে বসবেন শিক্ষার্থীরা।

রাত পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো লিখিতভাবে গ্রহণ করে উপাচার্য তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করেন। পরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং দাবি আদায়ের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সহমত জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সম্পূর্ণ একমত। আমার সন্তানের মৃত্যু এটা আমরা মেনে নেবো না। এই হত্যাকাণ্ডের আমরা বিচার করব। এজন্য আইন অনুযায়ী যা যা করা দরকার, শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা তাই তাই করব। তিনি বলেন, সব নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে। চালকসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা নির্মাণ সামগ্রী আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ৫টি ট্রাক ও নির্মাণাধীন ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়াও সহ¯্রাধিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী তারা নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাত আড়াইটা পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যান। শেষে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসের মধ্যে এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো না। আর এই রাস্তাগুলো ট্রাক চলাচলের উপযোগীও নয়। এসব সড়কে ট্রাক চালকেরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। তাছাড়া যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটা এ ধরনের একসিডেন্ট হওয়ার মতো জায়গা নয়। তাই কোনোভাবেই এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা একটা হত্যাকাণ্ড।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: