জিয়াউর রহমানের কবর সরানো নিয়ে এই মুহুর্তে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার বিকালে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কৃষক লীগের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।
তিনি বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবর থাকবে কী থাকবে না এই নিয়ে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাজে আমি এই নিয়ে কোনো বির্তকে যেতে চাই না। আমার বক্তব্য হচ্ছে, ওই কফিনে কী কোনো লাশ ছিল? যে লাশটা জেনারেল এরশাদ বহন করেছিলেন, ফখরুল সাহেব এটাকে প্রমাণ হিসেবে আনছেন। এটা কি প্রমাণ হলো? ভিতরে কিছু নেই, কফিন কে বহন করল সেটা কী প্রমাণ করে সেখানে তার লাশ ছিল?
‘আমি ফখরুল সাহেবের কাছে গত দুই বছর বার বার একটা প্রশ্ন করেছি, চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজ হতে যে লাশ ঢাকায় এলো, একটা লাশের ছবি দেখান, তাহলে প্রমাণ কি ভাবে দেবেন।
এই কথা বলতে গেলেই তিনি বলেন ওবায়দুল কাদের মিথ্যাচার করছে। আসলে তিনিই মিথ্যাচার করছেন। উনি বলেন, আমার সব প্রশ্নের উত্তর দেন, এখনও একটার প্রশ্নের উত্তর দেননি। গতকালও প্রশ্ন করেছিলাম, সার্কিট হাউজ থেকে লাশটা রাঙ্গুনিয়া গেল কী ভাবে? শুনা যায়, লাশ কোথায় পাবে, লাশ তো পুড়িয়ে ফেলেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রমাণ দেন, একটা ছবি দেখান। ১৫ আগস্টে কেক কাটা হলো প্রতিহিংসার রাজনীতি। এদেশে গুম-খুনের রাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০০ বছরের ইতিহাসে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ ও আন্দোলন সংগ্রামে কৃষকের অবদান রয়েছে। সিপাহী বিদ্রোহ থেকে বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রাম পুঞ্জিভূত হলেও স্বাধীনতা আসে নাই। স্বাধীনতা এসেছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও সংগ্রামে ফলশ্রুতিতে। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে টুঙ্গিপাড়ায় মার্কিন কাপড়ে, ৫৭০ সাবানে গোসল দিয়ে ১৮ জন মানুষ জানাজা দিয়ে দাফন করে, যার সবটাই জিয়াউর রহমানের মস্তিষ্কপ্রসূত। অজপাড়াগায় সেই টুঙ্গিপাড়া আজ বাঙালির তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল হানিফ এমপি বলেন, কৃষক লীগের সুশৃঙ্খলতা ও আধুনিকতা সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। ’৭১ এর পরাজিত শক্তির মদদে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, যার প্রত্যক্ষ বেনিফিশিয়ারী জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি আদেশ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে এবং জেল হত্যাকান্ডের পর হত্যাকারীদের বিদেশী দূতাবাসে চাকরি দেয়। জিয়াউর রহমান গোলাম আজমকে এদেশে ফিরিয়ে আনে এবং শাহ আজীজ, আব্দুল আলীমকে মন্ত্রী বানান। ২০০১ সালে অনুরূপভাবে খালেদা জিয়াও নিজামী ও মোজাহিদকে মন্ত্রী বানান। পাকিস্তান প্রীতির এমন নজির বিরল।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আকবর আলী চৌধুরী, মহাবুবউল আলম শান্তি, হোসনে আরা বেগম এমপি, কৃষিবিদ ড. নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম হিরন, কৃষিবিদ শাখাওয়াত হোসেন সুইট, মাকসুদুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, এ্যাড. শামীমা শাহরিয়ার এমপি, আলহাজ্ব একেএম আজম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. গাজী জসিম উদ্দিন, আসাদুজ্জামান বিপ্লব, কৃষিবিদ ড. হাবিবুর রহমান মোল্লা, সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, নূরে আলম সিদ্দিকী হক, অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম পানু, হিজবুল বাহার রানা, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এ্যাড. রুমানা আলী টুসি, আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ। আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও প্রধানমন্ত্রী কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা এমপি’র পক্ষ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: