তাই নিখোঁজদের সন্ধান পেতে নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে সরকারকে চাপ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, একজন মানুষকে যদি খুঁজে না পাওয়া যায়, তাকে খুঁজে দেওয়ার দায়িত্ব কার? সরকার আমাদের জান-মাল ও সম্পদের গ্যারান্টার।
আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মায়ের ডাক সংগঠনের মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, যতবারই এই প্রোগ্রাম হয়েছে ততবারই আমি এসেছি, এই হৃদয় বিদারক দৃশ্য ততবার বুকের ভেতর নিতে হয়েছে। প্রতিবছরই স্বজনরা বুক চাপড়ে হারানো প্রিয়জনদের ফিরে পেতে চান, তাদের খবর জানতে চান। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমরা আমাদের স্বজনদের খবর জানতে চাই। এখানে অনেক শিশুরা তাদের কথা বলেছেন, যা শুনে আমার চোখের কোণে পানি এসেছে।
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীককে যখন গুম নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন আমাদের দেশে গুম, খুন বলে কিছু নেই। আমাদের দেশে কিছু মানুষ জমিজমা নিয়ে বিরোধ বা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায়- এগুলো নিয়েই সবাই কথাবার্তা বলে। তার এ বক্তব্যের আমরা ধিক্কার জানাই।
তিনি স্বজনদের বলেন, ‘এখানে প্রস্তাব রাখতে চাই, আপনারা একদিন কোথাও কয়েকঘণ্টার জন্য অবস্থান নিন। ঢাকাবাসীকে বলুন- আমাদের হারানো স্বজনদের ফিরে পেতে সংহতি ঘোষণা করতে। সরকারকে এভাবে চাপ দিতে না পারলে, কোনও কাজে আসবে না।’
ডাকসুর সাবেক এ ভিপি আরও বলেন, বর্তমানে দেশ এমনকি বিশ্বজুড়ে যে অবস্থা চলছে, তা নিয়ে ভেবে দেখেন। তারা (সরকার) এ নিয়ে অসেচতন ছিলেন। এখন তারা বলছেন- করোনার দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউ আসছে। এখন এক ডলারের টিকা দশ ডলারে কেনা হচ্ছে, এই টাকা কে দেবে? এই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দেশকে নিঃস্ব করা হচ্ছে। তাই এই সরকার মানবিক বলে কিছু করতে চাইলে, তা হবে আশার গুড়েবালি।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা মনে করেন- রোজিনা ইসলামকে শেখ হাসিনা দয়া করে ছেড়ে দিয়েছেন, তারা ভুল বলেন। সত্যি কথা হলো- রোজিনা ইসলামকে ছেড়ে না দিলে বিপদ আরও বাড়তে পারতো। ওই রকম বিপদের জায়গা তৈরি করুন।
অনুষ্ঠানে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, যে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসেও নিখোঁজদের ছবি নিয়ে আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। শুধুমাত্র ভিন্নমত ও রাজনীতির কারণে তার গুম হয়েছেন। বিরোধীদলের মনোবল ভেঙে দিতে এমন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুশতাক মারা গেলে সবাই আওয়াজ তোলেন, ১২টি রাষ্ট্র থেকে বিবৃতি দেয়, আলোচনা হয়। কিন্তু বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টু এবং হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেন কারাগারে মারা গেলে আমরা কণ্ঠ তুলি না। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
মায়ের ডাক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক নিখোঁজ সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আফরোজা ইসলাম আঁখির সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর ছেলে আবরার ইলিয়াস, অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানসহ নিখোঁজদের স্বজনরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: