দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে আমেরিকা থেকে তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আসছেন। আগামীকাল বুধবার জন হপকিংস হাসপাতাল থেকে তারা বাংলাদেশে আসবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে বারবার সরকারের কাছে বলার পরও কোনো ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। তিনি দুই মাসের অধিক সময় ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে আজ ভোর পৌনে ৪টায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন আজ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, গতকাল রাত সাড়ে তিনটার দিকে খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট থেকে দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে।
বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এ কারণে তাকে কখনো কখনো সিসিইউতে নিতে হচ্ছে।
২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু সরকার সে আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগে ভুগছেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: