আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনে ব্যর্থতা যাদের, তারা নাশকতার পথে হাঁটছেন কিনা, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকার সময় ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশ কিছু বিস্ফোরণ, একই সময়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন; চার দিনের মধ্যে এতগুলো ঘটনাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না তিনি। তার মতে, এসব ঘটনা 'রহস্যজনক'। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নাশকতা করছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখার কথাও তিনি বলেছেন।
আজ বুধবার (৮ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভার আয়োজন করা হয়। এরসময় তিনি বলেন, এসব রহস্যজনক ঘটনার পেছনের কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা দলের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কিনা, তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা সিরিয়াসলি খতিয়ে দেখছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের কাজে বাইরে, ঠিক সেই সময় আমাদের দেশে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটনা ঘটে গেছে। এটা নাশকতা কিনা স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, অথবা নাশকতা, সেটা সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গুলিস্তান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, কক্সবাজারের বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, তা বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ঘটিয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছে সরকার- এমনটি মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের।
এদিকে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় এর আগে সরকারকে দায়ী করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংস্থা আছে। কিন্তু সেগুলো ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করে না। আর তাদের এই ব্যর্থতার কারণে ঘটছে এসব ঘটনা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাদের নিয়ে সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থতা যাদের, তারা এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নাশকতার পথ খুঁজছে কিনা, নাশকতার পথে হাঁটছেন কিনা, সেটাও আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।
এসব ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতাদের মাথা না ঘামানোরও পরামর্শ দেন কাদের। তিনি বলেন, কারও মাথা ব্যাথার প্রয়োজন নাই। মির্জা ফখরুল হুট করে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তার বিবৃতির ভাষা হচ্ছে যে, এই ধরনের একের পর এক ঘটনার রহস্যজনক। তিনি বলেন, আমরা তার সঙ্গে একমত। এই সময়ে দেশে এই ধরনের ঘটনা রহস্যজনক। এই রহস্যের ভিতরের বিষয়টি কী, সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।
গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন নামের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে।
তার দুই দিন আগে সায়েন্সল্যাব এলাকায় বিস্ফোরণে তিনতলা একটি ভবনের আংশিক ধসে পড়ে। তাতে মৃত্যু হয় তিনজনের। একইদিনে কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আগুনে পুড়ে যায় প্রায় দুই হাজার ঘর।
এর আগের দিন শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান যৌথ সভায় ছিলেন।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উন্মে কুলসুম স্মৃতি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনানও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: