নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। বিএনপি'র সভাস্থল ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে দলীয় কার্যালয়ের ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ ছিলেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
বুধবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে নেতাকর্মীদের বক্তব্য দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এতে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তা বাজারে থমথমে পরিবেশ রয়েছে।
এদিকে, বিএনপি নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ রেখে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল করে বলে জানান স্থানীয়রা।
বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল প্রতিবাদ সভা। কিন্তু হঠাৎ বিএনপির এক নেতা আ.লীগকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে সভাস্থলে হামলা চালান। ভাঙচুর করেন শতাধিক চেয়ার। এ সময় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বিএনপির নেতাদের। দুই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তা বাজারে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
অন্যদিকে নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ রেখে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ যৌথভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায় এবং ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে আমরা দলীয় কার্যালয়ের ভেতর অবস্থান নিলে বাইরে সভাস্থল ভাঙচুর করে। আমরা জেলার শীর্ষ নেতাকর্মীরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছি। দলীয় কার্যালয়ের দরজা ভেঙে আমাদের ওপর কয়েকবার হামলার চেষ্টা করা হয়েছে।’
এর আগে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল ৩টায় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির ডাক দেয়া বিক্ষোভ মিছিল হয় চৌরাস্তায়। এরপর নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সভায় বক্তব্য দিতে শুরু করেন। সভায় আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় এমপিকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিলে হামলা চালান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের লোকজন কোনো হামলা চালায়নি। বিএনপির কর্মসূচিতে রাজনৈতিক বক্তব্য না দিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে আসা বিএনপি নেত্রী নাজমা আক্তার স্থানীয় এমপিকে (দবিরুল ইসলামকে) জড়িয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় বিএনপির মধ্যে থাকা স্থানীয় এমপির সমর্থকরা এর প্রতিবাদ করেছে।
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, বিএনপির উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগ ও তাদের লোকজন হামলা চালায়। পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে পরিবেশ শান্ত হলে দলীয় কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁওয়ে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: