হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়াসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে থেকে টানা সাড়ে ৩ ঘন্টা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজতে ইসলামের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সেই বৈঠকে হেফাজতের পক্ষ থেকে ৪ দাবি তুলে ধরা হয়।
বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে হেফাজতের আহ্বায়ক কমিটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী দাবিগুলোর বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।
বাকী দাবিগুলো হচ্ছে- ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে যে মামলাগুলো হয়েছে পূর্ব আলোচনা অনুযায়ী এ সেগুলো প্রত্যাহার করা; দ্রুত কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা।
তিনি বলেছেন, আমাদের এই চার দাবি মন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন, আশ্বাসও দিয়েছেন।
জানা গেছে, হেফাজতের সহিংসতার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে হেফাজত দেশব্যাপী হেফাজত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার বিষয়ে আলোচনার গুরুত্ব উঠে আসে।
তবে ‘অসুস্থতার’ কারণে বৈঠকে থাকতে পারেননি হেফাজত আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বৈঠকে নুরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজী, মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি জসিমউদ্দিন, হাটহাজারী মাদ্রাসার মজলিশে এদারির সদস্য মাওলানা ইয়াহিয়া ও মুফতি জসীমউদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়া হেফাজতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। বৈঠক চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৯ এপ্রিল রাতে নুরুল ইসলাম জিহাদীসহ হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে গত মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। এসব নাশকতার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত এক ডজন হেফাজত নেতা গ্রেপ্তার রয়েছেন।
এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ জনতার হাতে ধরা পড়েন। এতে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়ে হেফাজত।
সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা শুরু থেকেই সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইতিমধ্যে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও নুরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: