নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারতের নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর এবার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সব নির্বাচনি জনসভা বাতিল করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এক টুইট বার্তায় মমতা বলেন, ‘আমরা ভার্চুয়ালি মানুষের কাছে পৌঁছে যাব। ভার্চুয়ালি মিটিংয়ের সময়সূচি খুব শিগগির জানিয়ে দেওয়া হবে।’
কলকাতা হাইকোর্টে ধমক খাওয়ার পর করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে নড়েচড়ে বসে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে যেসব রোড শো ও মিছিলের অনুমতি দেওয়া ছিল সেগুলো সবই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে সব রোড শো ও পদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকী বাইক ও সাইকেল শোভাযাত্রাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন থেকে শুধু সর্বাধিক ৫০০ জনকে নিয়ে জনসভা করা যাবে। তবে সেটাও শর্তসাপেক্ষে।
এদিকে পশ্চিম বাংলায় করোনার গ্রাফ ক্রমেই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১২ হাজার মানুষ এই রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এখনই করোনাকে রোখা না গেলে আগামী দিনে করোনা ভয়ংকর আকার নিতে পারে। আর, সে বিষয় মাথায় রেখেই প্রচার বন্ধের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে কলকাতায় বড় কোনো সভা না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কলকাতার বাইরে সভাগুলোতে তিনি মাত্র ১৫ মিনিট বক্তব্য দেন। কিন্তু, তারপরও রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলায় এবার সব জনসভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক মহল।
অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে পশ্চিমবঙ্গে সব সভা বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন তিনি।
জানা গেছে, কলকাতা সিউড়ি, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে সভা ছিলো মোদির। কিন্তু, করোনার জন্য সেই সভা ভার্চুয়ালি করা হবে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রেকর্ড সংক্রমণ ঘটেছে পশ্চিম বাংলায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্টে প্রকাশ, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৯৪৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্ত সাত লাখ ৯০৪ জন। যার মধ্যে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ৬৮ হাজার ৭৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ছয় হাজার ৫৯০ জন। যার ফলে পশ্চিম বাংলায় করোনামুক্ত হলো ছয় লাখ ২১ হাজার ৩৪০ জন। সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যে সমস্ত নির্বাচনি প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা ও মোদি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: