বিশ্বের প্রভাবশালী ও শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্র প্রধানদের গোপন লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তোলপাড় সৃষ্টি করা এসব নথির নাম দেয়া হয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্স।
‘করফাঁকির স্বর্গ’ নামে খ্যাত মোনাকো, পানামা, দুবাই, সুইজারল্যাণ্ডের মত দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানিতে এসব প্রভাবশালীরা কীভাবে তথ্য গোপন রেখে লেনদেন করেছেন তা-ই উঠে এসেছে এসব নথিতে।
গার্ডিয়ান ও বিবিসি’র মত প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম ওই কোম্পানিগুলোর অন্তত ১ কোটি ১৯ লক্ষ ডকুমেন্টস বিশ্লেষণ করে এসব অবৈধ লেনদেনের তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্যান্ডোরা পেপার্স হলো বিশ্বের সবয়ে ধনী ও প্রভাবশালী কিছু মানুষের গোপন সম্পদ, কর ফাঁকি, অর্থ পাচার ও কালো টাকা সাদা করার তথ্য সংবলিত প্রায় ১২ মিলিয়ন ফাঁস হওয়া নথি।
১১৭টি দেশের প্রায় ৬০০ সাংবাদিক ১৪টি উৎস থেকে পাওয়া নথিগুলো নিয়ে কয়েক মাস ধরে কাজ করছেন। যেটি এ সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) তথ্যগুলো পেয়েছে। যেটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক তদন্ত হিসেবে ১৪০টিরও বেশি মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে।
বিবিসি জানিয়েছে, পেপার্সে দেখা গেছে, বিশ্বের ৯০টি দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী কিছু মানুষ তাদের সম্পদ গোপন করতে অফশোর কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। তাদের মধ্যে ৩৩০ জনেরও বেশি রাজনীতিবিদ।
এ ছাড়া, রাষ্ট্রদূত, মেয়র, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা, জেনারেল এবং একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের তথ্যও পাওয়া গেছে।
পেপার্সে দেখা গেছে, কীভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলয়ের মন্ত্রীরা এবং তাদের পরিবার গোপন কোম্পানি ও কোটি কোটি ডলারের মালিক হয়েছেন।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে গোপনে ৭০ মিলিয়ন ডলার জমা রেখেছেন জর্ডানের রাজা।
পেপার্সে আরও দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রী লন্ডনে অফিস কেনার সময় স্ট্যাম্প শুল্কের মাধ্যমে ৩ লাখ ১২ হাজার ইউরো ফাঁকি দিয়েছিলেন। ব্লেয়ার দম্পতি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে ওই ভবনের মালিকও হন।
পেপার্সে মোনাকোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গোপন সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়া চেক প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস, যার চলতি সপ্তাহের শেষে একটি নির্বাচনে লড়তে হবে, একটি অফশোর বিনিয়োগ কোম্পানির মাধ্যমে ফ্রান্সের দক্ষিণে ১২ মিলিয়ন পাউন্ডে দুটি বাগান বাড়ি কিনেছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: