চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মিলিতভাবে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে। এ নিয়ে চীন ব্যাপক সমালোচনা করেছে। এবার পশ্চিমা আরেক মিত্র ফ্রান্সও এ পদক্ষেপের সমালোচনা করল। ফ্রান্স বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো আচরণ করছেন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এইউকেইউএস নামের এই চুক্তির অধীন অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রযুক্তি সরবরাহ করবে ওই দুই দেশ। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্রান্স। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দেশটির সাবমেরিন বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির আর্থিক মূল্য ছিল চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
এ প্রসঙ্গে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস লে ড্রিয়ান বলেন, ‘এ রকম নিষ্ঠুর, একতরফা ও হুটহাট সিদ্ধান্ত আমাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে আমি ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত। এটা মিত্রদের সঙ্গে করা যায় না।’
নৌযান নির্মাণশিল্প নিয়ে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে একধরনের বিরোধ বেশ আগে থেকেই রয়েছে। এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নতুন করে চুক্তি বদলে ফেলার ঘটনাকে নাটকীয় বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বের বড় বড় অস্ত্র রপ্তানি চুক্তির মধ্যে এটি অন্যতম।
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ফ্রান্সের নৌযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেভাল গ্রুপের কাছ থেকে তারা নতুন সাবমেরিন তৈরি করে নেবে। নতুন এই সাবমেরিন প্রতিস্থাপিত হবে পুরোনো কলিন্স সাবমেরিনের জায়গায়।
এ ছাড়া দুই সপ্তাহ আগেও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছিলেন, তাঁরা ফ্রান্সের কাছ থেকেই এই সাবমেরিন তৈরি করে নেবেন। এ ছাড়া গত জুনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন যখন ফ্রান্সে গিয়েছিলেন, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও দুই দেশের ভবিষ্যৎ সাহায্য–সহযোগিতার কথা বলেছিলেন। কিন্তু দুই সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল অস্ট্রেলিয়া।
এ প্রসঙ্গে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এর মাধ্যমে পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে। আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলাম। অস্ট্রেলিয়া সেই বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: