আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহারে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা করেছে তালেবান যোদ্ধারা। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটিতে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে প্রদর্শন করা হয় হামভি, এমআরএপিসের মতো দামি সাঁজোয়া যান। বুধবারের এ মিছিলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়, যা গত কয়েক দিনে জব্দ করেছে সংগঠনটি।
আফগান সেনাবাহিনীর শক্তি বাড়াতে সাঁজোয়া যান, ড্রোন, হেলিকপ্টার আর উড়োজাহাজসহ গত কয়েক বছরে ৩২ হাজার অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের শত-কোটি ডলারের এসব অস্ত্র ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম এখন তালেবানের হাতে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, শোভাযাত্রা শুরুর আগে জব্দ হামভির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তালেবান যোদ্ধাদের। কান্দাহারের মহাসড়কে সবুজ রঙের অনেকগুলো গাড়িকে এক সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকগুলোতে তালেবানের সাদা-কালো পতাকা যুক্ত ছিল।
২০১৭ সালে আফগানিস্তানে চার হাজার ৭০০ হামভির একটি চালান পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রায় পুরোটাই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও আফগান সেনাবাহিনী গত ২০ বছরের যুদ্ধে তালেবানের বিরুদ্ধে যেসব মাল্টি-পারপাস ট্রাক ব্যবহার করেছে, সেগুলোও তালেবান যোদ্ধারা জব্দ করেছে।
মিছিলে ভারী বন্দুক ও মেশিন গানসহ যোদ্ধাদের নিয়ে ট্রাকের একটি বহরও ছিল ।
১২ আগস্ট আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহারের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান, যেখানে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান সামরিক ঘাঁটি। ওই ঘাঁটি থেকে কমপক্ষে একটি ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক জব্দ করেছে তালেবান যোদ্ধারা।
অনলাইনে প্রকাশিত ফুটেজে তালেবানের পতাকা সংবলিত আরেকটি হেলিকপ্টারও দেখা গেছে শোভাযাত্রার ওপরে।
পশতু আদিবাসী অধ্যুষিত কান্দাহারেই জন্ম তালেবানের। এখান থেকেই সংগঠনটির উত্থান শুরু নব্বইয়ের দশকে।
লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা কান্দাহারে থাকেন বলে গত রোববার জানিয়েছে সংগঠনটি।
গত ২০ বছরে আফগান সেনাবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রায় পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহযোগিতা ও সামরিক সরঞ্জামনির্ভর ছিল।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শেষ কয়েক বছরেই আফগান সেনাবাহিনীকে সাত হাজারের বেশি মেশিন গান, ২০ হাজার গ্রেনেড, চার হাজার ৭০০ সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার ও ছোট বিমানসহ দুই শতাধিক আকাশযান, ড্রোনের মতো সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ সময়ে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে গড়ে তোলা ও প্রশিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় ছিল আট হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: