জাতিসঙ্ঘের পরমাণু সংস্থা তাদের এক রিপোর্টে বলছে, উত্তর কোরিয়া তার ইয়ংবিয়ন পরমাণু চুল্লি আবার চালু করেছে বলে মনে হচ্ছে। এই চুল্লির কমপ্লেক্সে এখন প্লুটোনিয়াম তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে প্লুটোনিয়াম দরকার হয়।
উত্তর কোরিয়ার সরকার ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিনিধিদের বহিস্কার করেছিল। তারপর থেকে আইএইএ স্যাটেলাইটে তোলা ছবির ভিত্তিতে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির ওপর নজরদারি চালায়।
আইএইএ বলছে, ইয়ংবিয়ন পরমাণু চুল্লি থেকে গত জুলাই হতে শীতল রাখার পানি নির্গত হচ্ছে, যা থেকে মনে হয় চুল্লিটি চালু আছে। ইয়ংবিয়ন পরমাণু কেন্দ্রে একটি পাঁচ মেগাওয়াটের চুল্লি আছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির একেবারে মূল কেন্দ্র এটি।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পর এই প্রথম এটি চালু করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সেবছর সিঙ্গাপুরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল।
ইয়ংবিয়নের ওপর বিশেষজ্ঞরা সবসময় দূর থেকে নজরদারি চালান, যাতে উত্তর কোরিয়ার সরকার কত পরমাণু অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা রাখে, সেটা সম্পর্কে আঁচ পাওয়া যায়।
আইএইএ এই একই পরমাণু কেন্দ্রের একটি রেডিও-কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। এই ল্যাবরেটরিতে নিঃশেষিত পরমাণু জ্বালানি পুনপ্রক্রিয়াজাত করা হয়। গত জুন মাসে এই ল্যাবরেটরির কর্মতৎপরতার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিল আইএইএ। ইয়ংবিয়ন পরমাণু চুল্লি এবং ল্যাবরেটরিতে এসব তৎপরতাকে আইএইএ ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছে। তারা বলেছে, এই জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
উত্তর কোরিয়া তাদের সর্বশেষ পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে ২০১৭ সালে।
উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল, সেটি ২০১৯ সালে ভেঙ্গে যায়।
গত জানুয়ারিতে কিম জং আন ঘোষণা করেন যে, তার দেশ আরও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে। তিনি বলেছিলেন, তাদের বিজ্ঞানীরা নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের আকার কীভাবে আরো ছোট করে আনা যায় এবং একটি প্রচণ্ড শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করবে।
সূত্র : বিবিসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: