সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় জড়িত সৌদির চার এজেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের একটি বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানিটি ২০১৭ সালে সৌদির ওই চার এজেন্টকে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়। খাসোগি হত্যায় অংশ নেওয়া আর এই চারজনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর অনুমোদন দিয়েছিল।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানায়।
খাসোগি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক। তিনি একসময় সৌদির রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে কট্টর সমালোচক বনে যান। বিশেষ করে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ দেশটির বর্তমান নেতৃত্বের কট্টর সমালোচনা করছিলেন তিনি।
খাসোগি তাঁর বিয়ের জন্য কাগজপত্র আনতে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে যান। সৌদি আরব থেকে পাঠানো ঘাতক দল সেখানে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে গায়েব করে দেওয়া হয়। তাঁর দেহাবশেষ আর পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের একটি বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসভিত্তিক এই কোম্পানিটি ২০১৭ সালে সৌদির ওই চার এজেন্টকে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ২০১৪ সালে প্রথম সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অনুমোদন দেয়। পরে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের শুরুর দিক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের কোম্পানিটির মূল মালিক সারবেরাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। সারবেরাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লুইস বারমার এক নথিতে নিশ্চিত করেছেন যে সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ‘টায়ার ১ গ্রুপ’।
সৌদি আরব প্রথমে খাসোগি খুন হওয়ার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। পরে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শুরু থেকেই সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সন্দেহ করা হয়। তবে তিনি এই হত্যায় তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছেন। অবশ্য সৌদির শাসক হিসেবে তিনি এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তিনজনকে দিয়েছেন কারাদণ্ড। পরে খাসোগির পরিবার হত্যাকারীদের মাফ করে দিলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচজনের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: