জার্মানির রাজধানী বার্লিনে সোমবার ট্রাক্টর দিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে কৃষকরা। সরকার কৃষিতে ভর্তুকি কমিয়ে দিচ্ছে এই অভিযোগ এনে তারা এই প্রতিবাদে শামিল হয়। দেশব্যাপী পদক্ষেপের অংশ হিসাবে এই বিক্ষোভ করে তারা।
একদিন আগে দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন এসে রাজধানীতে জড়ো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল তারা এই আন্দোলন-সংগ্রামে শামিল হয়। কৃষকদের বক্তব্য, সরকার এভাবে কৃষিতে ভর্তুকি কমিয়ে দিতে পারে না। সরাসরি উত্পাদনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ওপর কখনোই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। গত এক সপ্তাহ ধরে এ বিক্ষোভ করছে তারা। অবশ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, অতি-ডানপন্থিরা এসব করছে। তাদের ইন্ধনেই কৃষকরা সরকারের বিরুদ্ধে এ কাজ করছে। জার্মান সরকার বলছে, কৃষিতে এমনিতেই যথেষ্ট ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো অর্থ হয় না। এটি ডানপন্থি রাজনীতিবিদদের কারণে ঘটছে।
চ্যান্সেলর ওলফ শলেসর নেতৃত্বে জার্মানিতে এখন জোট সরকার চলছে। সম্প্রতি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কৃষি খাতে বেশ কিছু ভর্তুকি কমানো হবে। কারণ, জার্মানিতে কৃষিক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয় বলে সরকারের দাবি। এরই প্রতিবাদে রাস্তায় নামার হুমকি দেয় কৃষকেরা। তার জেরে কয়েকটি প্রস্তাব ফিরিয়ে নেয় সরকার। কিন্তু তাতেও খুশি হননি কৃষকেরা। বার্লিনে গিয়ে ঐতিহাসিক ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু করার পরিকল্পনা করেন তারা। সেই মতোই রবিবার বিকালে বার্লিনে পৌঁছান কৃষকেরা।
শুক্রবার জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, এই আন্দোলনের পেছনে অতি ডানপন্থিদের হাত আছে। জার্মান অর্থমন্ত্রী কৃষকদের ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কৃষকেরা তাতে রাজি হননি।
এদিকে সাবেক শাসক দল সিডিইউ, সিএসইউ, অতি ডানপন্থি এএফডি এবং আরেকটি দক্ষিণপন্থি দল ফ্রি ভোটারস এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। কৃষক আন্দোলনের জেরে বার্লিনের বেশ কয়েকটি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার সেখানে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিবহন মন্ত্রণালয়ও এ ব্যাপারে আগাম সতর্কতা দিয়েছিল। হামবুর্গেও যানজটের আশঙ্কা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে প্রশাসন। কারণ সেখানেও কৃষকেরা শহরে এসে প্রতিবাদ দেখাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: