গাজা উপত্যকার উত্তরাংশে বিভিন্ন হাসপাতাল ও হাসপাতালের কাছাকাছি এলাকাগুলো থেকে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সারা দিন একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ইসরায়েলের ট্যাংকগুলো গাজার আল-রানতিসি শিশু হাসপাতালে গোলাবর্ষণ করছে। হাসপাতালে অবস্থান নেওয়া বেসামরিক লোকেরা জানান, তারা সেখানে আটকা পড়েছেন। ইসরায়েলও নিশ্চিত করেছে, গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার খুব কাছেই তারা অভিযান চালাচ্ছে। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র অবশ্য দাবি করেন, তারা হাসপাতালগুলোতে হামলা চালাচ্ছেন না, কিন্তু হাসপাতাল থেকে যদি হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে ইসরায়েল জানে তাদের কী করতে হবে।
এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অস্ত্রবিরতি ইসরায়েলকেই লাভবান করবে।
ম্যাক্রোঁ জোর দিয়ে বলেন, ফ্রান্স পরিষ্কারভাবে হামাসের ‘সন্ত্রাসী’ তৎপরতার নিন্দা জানায় এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকার করে।
এদিকে, ইসরায়েল গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহতের পরিসংখ্যানে পরিবর্তন এনেছে। দেশটি জানায়, ওই হামলায় এক হাজার ৪০০ নয়, মোট এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, শনাক্ত করা যায়নি এমন কিছু মরদেহ ‘সন্ত্রাসী’দের বলে ধারণা করছেন তারা।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে চার হাজার ৫০০ জনই শিশু।
এদিকে, হামাস-ইসরায়েলে যুদ্ধ শুরুর ৩৫তম দিনে গাজার হাসপাতালগুলোর বাইরে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকগুলোকে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, গাজার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফা, আল-কুদস, আল-রানতিসি এবং একটি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের ভেতরে ও কাছাকাছি এলাকায় গতকাল সারা দিন থেকে থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েল হামাসকে আল-শিফা হাসপাতালের নিচের টানেল থেকে হামলা চালানোর জন্য দায়ী করে আসছে। তবে, হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, গাজা সিটির আল-রানতিসি হাসপাতালটি ইসরায়েলের ট্যাংক বহরের নেতৃত্বে দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন একজন নারী। তিনি জানান, সৈন্যরা সবাইকে হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, উত্তর গাজার হাসপাতালগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কোনো উপায় নেই। আর এতে জীবন বিপন্ন হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ১১ হাজার ৭৮ জন নিহত এবং ২৭ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: