প্রায় দেড় বছর আগে বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়। এই দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্বে তাণ্ডব চালিয়ে গেলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানে করোনার উত্তাপ যেন একদমই পড়েনি।
অনেকটা নীরবেই করোনা মোকাবিলায় সফলতা অর্জন করেছে দেশটি। খবর দ্য আটলান্টিকের।
গত ৭ জানুয়ারি ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই ব্যক্তির আগে থেকেই লিভার এবং কিডনির সমস্যা ছিল। শেষ পর্যন্ত করোনার কারছে হেরে যান তিনি। মৃত্যু হয় তার।
ভুটানে করোনায় মৃত্যু হওয়া তিনিই হচ্ছেন প্রথম ব্যক্তি। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতে গত রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে করোনা। এ বছরও তাণ্ডব চালাচ্ছে এই ভাইরাস। আরেক প্রতিবেশী দেশ চীন থেকেই আবার শুরু হয়েছিল এই মহামারি। অথচ ভুটানে তার আঁচটুকুও যেন পড়েনি।
করোনায় বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোও রেহাই পায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে করোনা। অথচ ছোট একটি গরিব দেশ ঠিকই সফলতা অর্জন করেছে।
তবে শুধু ভুটানই নয় করোনা মোকাবিলায় আরও বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল এবং গরিব দেশ সফল হয়েছে। যেখানে বিশ্বের ধনী দেশগুলো যাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও খুব ভালো, তারা ব্যর্থ হয়েছে। ভিয়েতনাম, রুয়ান্ডা, সেনেগালের মতো দেশগুলোতে যথাক্রমে ৩৫, ২২৬ এবং ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় ভুটানের সফলতার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই দেশটি কখনও কারও উপনিবেশ হয়নি। তাই দেশটির মানুষ কষ্ট সহ্য এবং প্রয়োজনে আত্মত্যাগ করতে পারে। আর এটাই তাদের জাতীয় ঐক্যকে সুসংহত করেছে। তাই দেশ হিসেবে এই মহামারির মোকাবিলা করেছে তারা।
এর ফলে গত বছর দেশটিতে যখন করোনার সংক্রমণ হয়, সবাই ভেবেছিল ভুটান ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। কারণ দেশটির প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যার জন্য মাত্র ৩৩৭ জন চিকিৎসক রয়েছে। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রস্তাবিত অনুপাতের অর্ধেকের চেয়েও কম।
এমনকি এই চিকিৎসকদের মধ্যে মাত্র একজনের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের অ্যাসভান্সড ট্রেনিং নেয়া আছে। দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। ভাইরাল নমুনা পরীক্ষার জন্য মাত্র একটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। তারপরও করোনা মোকাবিলায় অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখিয়েছে ভুটান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: