দূষণের বিপর্যয় ঠেকাতে কেবলমাত্র একবার ব্যবহারযোগ্য সব ধরনের প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করেছে ভারত। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় প্লাস্টিকের স্ট্র, ছুরি-চামচ, ইয়ার বাড, মোড়ক; বেলুন, ক্যান্ডি এবং আইসক্রিমে ব্যবহার করা কাঠি, সিগারেটের প্যাকেটসহ আরও বেশ কিছু পণ্য রয়েছে।
খাদ্য, পাণীয় এবং ভোগ্য পণ্য তৈরির কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এ ধরনের প্লাস্টিকের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ না করার দাবির মধ্যেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ ভারতে দূষণের বড় একটি কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য।
অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধির মধ্যে দেশটিতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ টন প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করা হয়।
প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোনো শৃঙ্খলা না থাকার কারণে শহরের রাস্তাঘাটে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দেখা যায় এবং পরে সেসব নালায় আটকে যায়, নয়তো নদী এবং সাগরে গিয়ে পড়ে।
নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে ‘স্ট্র’ বাদ দেওয়ার জন্য খাদ্য ও পানীয় তৈরির কোম্পানি পেপসিকো, কোকা-কোলা, পার্লে অ্যাগ্রো, ডাবর এবং আমুল এর পক্ষ থেকে তদবির চালানো হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ভোক্তাদের কথা বিবেচনায় প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দিলেও সেসব যাতে বারবার ব্যবহার করা যায় সেজন্য উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং আমদানিকারকদের প্রতি এর পুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারীদের অভিযোগ, এসব বিধি-নিষেধ আরোপের আগে তাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অবৈধ ব্যবহার, বিক্রি এবং বিতরণ ঠেকাতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘ বলছে, সাগর-মহাসাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর পরিমাণ আনুমানিক ১০ কোটি টন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞানীরা গভীর সাগরে বসবাস করা তিমির পেটেও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি দেখতে পেয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: