দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম আর দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় মডেল বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
শনিবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা থেকে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত ।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এরই আধুনিক রূপে উপকূলীয় ও বন্যা উপদ্রুত ১৪৮টি উপজেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। সেখানে উপকূলীয় দুর্গত জনগণ যেমন আশ্রয় নিতে পারবে, তেমনি তাদের প্রাণিসম্পদকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে।
এছাড়া জনসাধারণের খেলার মাঠ, সামাজিক অনুষ্ঠান ও হাট-বাজার হিসেবেও এটি ব্যবহার করা যাবে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি জানান, বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙ্গন এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে বন্যা পীড়িত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দোতলা ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে । এতে প্রায় ৯২ হাজার মানুষ এবং ২৩ হাজার গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৮-২০২২ মেয়াদে ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের এ সফলতাকে এগিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজের আহবান জানান এনামুর রহমান।
আলোচনায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ কবলিত ২০ জেলার ২০ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ২০ জন এনজিও প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ এর যৌথ উদ্যোগে এ মুক্ত আলোচনা হয়।
দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় আরও বেশিসংখ্যক ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, লবণাক্ত এলাকায় সুপেয় পানির উৎস তৈরি ও সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা ও নদীভাঙ্গন রোধে বৃক্ষায়নসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন তারা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: