পশ্চিমবঙ্গে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে দেশের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
রোববার গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু ভারতে মামলা হয়েছে, মনে হয় না খুব সহজ হবে। আমাদের দেশেও মামলা হয়েছে, সে মামলায় তাকে প্রয়োজন এটা বলে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এটা বলে আনা না গেলে সেখানে বিচার শেষ হলে ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত হবে, আদালতে এই মামলার বিচার হবে। তিনি পলাতক এই মর্মে রিপোর্ট পেলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে শুক্রবার বনানী থানার এই ইনস্পেকটরকে আটক করা হয়। এরপর ভারতের স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। আটক অবস্থায় তার একটি ছবিও প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিনের আপন ভাই সোহেল রানা। দু'হাজার সাত সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রাহকরা টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করেছেন।
পণ্য ডেলিভারি না দেয়া এবং অগ্রিম অর্থ ফেরত না দেয়ায় ইঅরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে।
বিএসএফ জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা শুক্রবার বিকেলে শেখ মো. সোহেল রানাকে চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছে।
দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল দিয়ে তিনি দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেন বলে বিএসএফ বলছে।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারের পর মি. রানা তাদের জানিয়েছেন যে পুলিশ বিভাগ থেকে সাত দিনের ছুটি নিয়ে তিনি সীমান্তের দিকে রওনা হন। তার গন্তব্য ছিল নেপালের কাঠমান্ডু। সেখানে তার এক বোন থাকেন।
বোনের স্বামীর ভারতের শিলিগুড়িতে এসে তাকে নেপালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
আটক পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড এবং ব্রিটেনের একটি ব্যাংকের কার্ড পাওয়া গেছে বলে বিএসএফ জানিয়েছে।
তার পাসপোর্টে থাইল্যান্ড, সৌদিআরব, ফ্রান্সি, চীনসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা রয়েছে বলে বিএসএফ বলছে।
তবে ইঅরেঞ্জের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহেল রানা বিএসএফকে জানিয়েছেন যে তিনি নিরপরাধ এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলাদেশর কোন আদালতে প্রমাণিত হয়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: