প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চরম মিথ্যাচার করছেন দাবি করে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার খুব করুণা হয়। খুব বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ, তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আমার ভাবতে অবাক লাগে, গণস্বাস্থ্যের জাফরুল্লাহ সাহেব গতকালকে এতবড় মিথ্যাচার করেছেন। যেটা ভাষায় বলার মতো নয়।
শনিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বিআইডব্লিউটিএ ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ৮১ সালে দেশে এসে বলেছিলেন, আমার বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছে। তোমরা কাঁদো নাই। আমি তোমাদেরকে কাঁদায়ে ছাড়বো। তাই উনি আজকে আমাদের কাঁদাচ্ছে।’
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কথা তিনি কোথায় পেলেন! এত বড় মিথ্যাচার করতে পারে মানুষ। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু তাকে গণস্বাস্থ্য করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই গণস্বাস্থ্য।
ডা. জাফরুল্লাহকে উদ্দেশ্য করে খালিদ মাহমুদ আরো বলেন, স্বৈরাচার জিয়া, এরশাদের পদলেহন করেছেন আপনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার কারণে আমরা আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। ১৯৯৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার জন্য জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ আজকে আপনি সেই সকল অপরাধীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ছিলেন। এখন যখন দেখছেন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আপনার এটা সহ্য হচ্ছেনা। আপনি নতুন ষড়যন্ত্র করছেন। এমন একজন শিক্ষিত ও বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ যদি মিথ্যাচার করে, তখন মানুষ বিভ্রান্ত হতেই পারে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরুল্লাহ’র মতো এমন অনেক বর্ণচোরা মানুষ এখন লুকিয়ে আছে। আমাদেরকে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রতিশোধপরায়ন হলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার এভাবে হতো না। খুনীদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। সব ধরনের আইনী নিয়ম অনুসরণ করেই সে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে। নিম্ন আদালতের রায়ের পর বিএনপি আমলে ২০০১ সালের পর হাইকোর্টে ১১ বার বিচারকরা বিব্রতবোধ করেছে। তারা বিচারক ছিলনা; তারা সে সময়ের সরকারের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ছয় বছর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার উচ্চ আদালতে আটকে ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই রায় কার্যকর হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, ষড়যন্ত্র আমরা মোকাবেলা করেছি। এই করোনা মহামারীর মধ্যে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্রের পথ তৈরি করা হচ্ছে। কোন ষড়যন্ত্র আর আমাদের আটকাতে পারবেনা। কারণ বাংলাদেশের জনগণ বুঝে গেছে সত্য কোনটা। সত্য-ন্যায়ের পথে থাকলে আমরা এগিয়ে যেতে পারি। আজকের বাংলাদেশ সেটাই প্রমাণ করে।
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকারের সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধান পাল্টে দেয়া, খুনীদের পুনর্বাসন ও রাজনীতি করার সুযোগ, বিচারের পথ রুদ্ধ করাসহ সে সময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম লায়লা জেসমিন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন ও বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: