জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) স্নাতক (সম্মান) (২০২২-২০২৩) সেশনের ৫২তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছে। তারা অনলাইনে ক্লাস করতে নারাজ। স্বশরীরে ক্লাস দেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জাবির নবীন শিক্ষার্থীরা।
বিগত বছরের ২০২৩ খ্রীঃ ৩০শে নভেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়। অনলাইনে ক্লাস চললেও পুরনো বছর পেরিয়ে নতুন বছর শুরু হলেও এখনো তাদের স্বশরীরের ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের মনোভাব ব্যক্ত করে বলেন, পুরোপুরি জাবিয়ান আর হলাম কোথায়? আমাদের ভর্তি পরীক্ষার পর ২য় বার ক্যাম্পাসের মুখ দেখার সুযোগ হয়নি অনেক শিক্ষার্থীদের। তার মধ্যেই অনলাইন ক্লাস দিয়ে দিয়েছেন। কোর্স বণ্ঠন ও সাথে চূড়ান্ত পরিক্ষার তারিখ জুড়ে দিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগ। আমরা এখনও আমাদের ক্যাম্পাস থেকে অনেক দূরে। অন্যদিকে ২০২৩-২০২৪ সেশনেরও ভর্তি পরীক্ষার তারিখ দিয়ে দিয়েছেন জাবি প্রশাসন। আর এইদিকে আমরা ভালোভাবে চিনিই না আমাদের জাবি ক্যাম্পাসকে।
৫২তম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, শুধু কোর্স গুলো সম্পর্কেই জানতে পেরেছি। ৮ টা কোর্সের মধ্যে ঠিক ভাবে ৪ টা ক্লাসও হচ্ছেনা। বাকি ৪ টা ক্লাসের কোনো খবরই নাই। বই কেনার ব্যাপারে স্যারকে জিজ্ঞাসা করলে স্যার বলেন, এখনি বই কিনতে হবে না এখন শুধু অ্যাটেনডেন্স নেওয়ার জন্য ক্লাস হচ্ছে, এক মাস পর ক্লাস শুরু হলে বই কিনে নিও তখন বই এর নাম বলে দিব। এক মাস বই না পড়লেও আহামরি ক্ষতি হবে না।
উক্ত শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমাদের পড়াশোনার বিষয়টা এখনো বুঝতে পারতেছি না, কিভাবে শুরু করবো, কোন কোন বই পড়বো কিছুই জানি না, এদিকে স্যারেরাও বইয়ের নাম বলে দিচ্ছেন না, আমরা এইদিক থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলো স্বশরীরে ক্লাস শুরু করে অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে আমরা এখনো ক্লাস রুমেই বসতে পারলাম না। যাইহোক, আমরা অতি শীগ্রই অফলাইনে ক্লাস চাচ্ছি। আমরা কেউই আর ক্লাস করব না অনলাইনে। অনেক শিক্ষকই যেমন অনলাইনে ক্লাস নিতে আগ্রহী নন,তেমনি আমরাও অনলাইনে ক্লাস করতে ইচ্ছুক নই।
নবীন শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে ক্লাস এবং হল অ্যালোটমেন্ট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ জানান, নতুন হল গুলোতে যদি আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ করতে পারি তাহলে আমরা শীঘ্রই হল চালু করতে পারবো বলে আশা রাখি, তবে সেটি এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। হল অ্যালোটমেন্ট এর ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, হল অ্যালোটমেন্ট তো আসলে অফিসিয়ালি দেওয়া হয়। হল অ্যালোটমেন্ট রেজিস্টার অফিস থেকেই দেওয়া হয় সেজন্য মিটিং করেই এটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সব প্রোভোস্ট এবং রেজিস্ট্রার অফিস মিটিং করে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে কবে হল দেওয়া হবে, তবে পুরোপুরি প্রক্রিয়াটা এখনও প্রসেসিং এর মধ্যেই আছে। জানুয়ারি মাসের আগামী এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। মিটিং ছাড়া একজ্যাক্টলি ডেট বলা যাবে না, তবে জানুয়ারির মধ্যেই ইনশাআল্লাহ সবকিছু হয়ে যাবে এইটুকু বলতে পারি।
উল্লেখ্য, বিগত বছরের ১৮ জুন থেকে ২২ জুন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু স্বশরীরে নবীনদের ক্লাস শুরুর আগেই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তির আবেদন ও পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: