এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা দেখার সময় প্রথম সারির সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের টিভি রুমে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান। তিনি ফলিত গণিত বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের ১৪০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। অপর দিকে অভিযুক্তরা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন ও ছাত্রলীগ কর্মী তাসকীফ আল তৌহিদ।
অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গতরাতে (রোববার) হলের টিভি রুমের সামনের সারিতে বসে তিনি খেলা উপভোগ করছিলেন। এমন সময় ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ তাকে সিট থেকে উঠে যেতে বলে। তখন তিনি কোন প্রতিবাদ না করে বের হয়ে যায়। পরে তিনি বিষয়টি হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনকে জানান। পরে রাত ১২টার পর তৌহিদ, শামীম ও তার সহযোগীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান বলেন, আমাকে যখন টিভিরুম থেকে বের করে দেয় তখন আমি বিষয়টি শামীমকে জানাই। পরে রাত ১২টার দিকে শামীম আমাকে হল গেটে ডাকে। সেখানে গেলে শামীম আমাকে থাপ্পর দেয় এবং তৌহিদ আমাকে লাথি মারে। আর তাদের সাথে আরেকজন ছিল সেও আমাকে থাপ্পর মেরেছে। সেই সাথে আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং বলে ‘তুই কীভাবে হলে থাকিস সেটা দেখব।’
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হোসেন বলেন, মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। রাতে খেলা দেখার সময় সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে একটু ঝামেলা হয়। সেখানে আমি ছিলাম না। পরে ওই ছেলে আমাকে বিষয়টি জানায়। তখন সেখানে গিয়ে দেখি ওদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়ে গেছে। তখন আমি তাদেরকে শান্ত করি।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী তাসকীফ আল তৌহিদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এএইচএম মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনা তদন্ত করার জন্য হলের আবাসিক শিক্ষক ড. অনিক কৃষ্ণ কর্মকারকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- আবাসিক শিক্ষক ড. হামিদুল ইসলাম ও ড. আব্দুল কাদের।
প্রসঙ্গত, গত ২২ জুন হলের ২৪৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র মুন্না ইসলামকে মারধর করে বের করে দেন শামীম ও তৌহিদ। এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৌহিদকে হল থেকে বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব শেষ হওয়ায় শামীম হোসেনকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: