২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় অপরাধীরের বিচার ও শাস্তির দাবিতে মানবন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা। রবিবার (২১ আগষ্ট) বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম, রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকাতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে, ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নুর, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাষ কর্মকার, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফায়েক-উজ্জামান সহ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘পনেরো আগষ্টের যে চক্র মুক্তিযুদ্ধের মহানায়কে হত্যা করেছিল, সেই চক্র মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে পুরোপুরি নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। যে সময় বোমা হামলা চলে তখন আওয়ামীলীগের কর্মীরা মানব ঢাল তৈরী করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছে। একজন নেত্রীর প্রতি এদেশের জন মানুষের, রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দের কি পরিমাণ আস্থা বিশ্বাস রয়েছে যে নিজের জীবন কে তুচ্ছ করে জননেত্রীকে রক্ষা করতে চায়। তিনি এই বাংলাদেশের জন্য কি মূল্য বহন করে সেই ব্যাপার টি যাদের মনের মধ্যে আছে তারা প্রাণ দিয়ে তাকে রক্ষা করে। শুধু সেই জায়গায় নয়, সারা দেশব্যাপী অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা প্রয়োজনে প্রাণ দিয়ে তাকে রক্ষা করবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘যে সময় হামলা চলে তখন এবং তার পরবর্তী সময়ে পুলিশ বাহিনী ছিল নির্বিকার। তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হয় নি। উল্টো তারা চেষ্টা করেছে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে, জজ মিয়া সহ ঘটনা অন্য দিকে প্রবাহিত করতে নানান ধরনের নাটক সাজিয়েছে। এর পরবর্তীতে তো আমারা প্রকৃত সত্য দেখতে পেলাম। তারেক রহমান, পিন্টু, বাবর সহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ফাঁসির রায় হয়েছে। আমরা এর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এই হামলার দায় তিনি কোন ভাবেই এড়াতে পারেন না। ২১ আগষ্ট সহ বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছিল কিন্তু তারা পরে নি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। এদেশের আপামর জনতা শেখ হাসিনার সাথে আছে’।
উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যখন পাকিস্থানের অধীন থেকে স্বাধীন হয়েছে তারপর থেকে এই পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা এদেশের শান্তি নষ্ট করার জন্য একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাদের সেই পরিকল্পনা মাফিক ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট নাড়কীয় গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনা মূল লক্ষ্য ছিল। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের নেতৃত্ব শূন্য করতে। কিন্তু বাংলার জনগণ ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রাণ সদস্যরা নেত্রীকে রক্ষা করেছে। দেশকে রক্ষা করেছে এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম হিসেবে ঠিকে থাকার শক্তি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে উদ্দীপ্ত ভাবে বলেছিলেন এই দেশকে আর কেউ কোনদিন পরাধীন করতে পারবে না। সেটি আজকে প্রমাণিত হয়েছে’।
মানবন্ধনে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘২১ আগস্টের মতো এমন নারকীয় হত্যাকান্ড পৃথিবীর বুকে কোথাও ঘটেনি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি পঁচাত্তরের হত্যাকান্ড চালায়। এইকভাবে ২১ আগস্টের এ হামলাও তারাই ঘটিয়েছে। তারা বার বার চেয়েছে এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি একেবারে মুছে দিতে। কিন্তু তারা পারে নি। এখনই সময় আমাদের একাত্ম হয়ে কাছে আসার। আওয়ামীলীগ একমাত্র দল, যে দলের সৃষ্টি জনগণের হৃদয়ের উত্থান থেকে। যাদের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সম্ভব হয়েছে। তাই শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদকে রক্ষার জন্য’।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সেক্রেটারি অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৩৫ জন শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: