নভীর আহমেদের হয়ে প্রক্সি দেন বায়োজিদ খান। কিন্তু এই পরীক্ষার্থী ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে প্রথম হয়েছে। তবে তার ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ফলাফল বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে। তিনি জানান, তানভীর আহমেদের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে ওই ইউনিটের ভর্তি কমিটি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২১-২২ সেশনের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টায়। প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, ‘এ’ ইউনিটের ৩৯৫৩৪ রোল নম্বরধারী তানভীর আহমেদ নামে একজন দ্বিতীয় শিফটে প্রথম হয়েছেন। এর এই ভর্তিচ্ছুর হয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন বায়োজিদ খান।
সে সময় আটক রাবির ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান। বায়েজিদকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠান আদালত। এছাড়া ওইদিন আরও তিনজন প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হন।
ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ওইদিন ৬২৮২৮ রোল নম্বরধারী ইশরাত জাহানের হয়ে প্রক্সি দেন জান্নাতুল মেহজাবিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রক্সি বা জালয়াতি ধরা পরার পর ইশরাত বহিষ্কার হবেন, কিন্তু প্রকাশিত ফলে দেখা যায় তিনিও পাস করেছেন। তিনি তৃতীয় শিফটে ৪৬ দশমিক ৯০ পেয়ে ৬ হাজার ৯২১ তম অবস্থানে রয়েছেন।
প্রক্সিতে ধরা পড়ার পরও ফল প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বলছেন, এটি পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার প্রমাণ।
তানভীর আহমেদের প্রথম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, তার ফল বাতিল করা হয়েছে। এ নিয়ে ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার হয়ে প্রক্সি দিয়েছে কেউ এই তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। প্রক্সি ধরা পরলে তার খাতা আলাদা করে ফেলা হয়। কিন্তু এটি আমাদের অবহিত করা হয়নি। সেজন্য তার নাম রয়ে গেছে।
প্রক্সি প্রমাণ হওয়ার পরও ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটি তাদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা। ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর খাতা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হওয়া উচিত ছিল। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ওই শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে বেশ সর্তক থাকে। তারপরেও যদি এমনটি হয়ে থাকে তবে এটি বড় ভুল। কারণ একটি ছেলে প্রক্সি দিতে এসে যখন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তখন এটি প্রমাণিত যে সে প্রক্সি দিয়েছে। তার মানে তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জন্য জন্য বড় ব্যর্থতা।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মাত্র শুনলাম। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানই এ বিষয়ে ভালো উত্তর দিতে পারবেন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: