প্রতি বছরই নোয়াখালীবাসীর আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এবারও যেন তার কমতি নেই। আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে নোয়াখালীতে আগত ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের জন্য বিগত বছরের ন্যায় এবারও বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল৷ থাকছে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও।
আগামীকাল ৩০ জুলাই সারাদেশে একযোগে ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে৷ ১৩ আগস্ট ‘খ’ ইউনিট এবং ২০ আগস্ট (সম্ভাব্য তারিখ) ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নোবিপ্রবি কেন্দ্রে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন তারা এই সুবিধা পাবেন বলে জানান আয়োজকরা।
এরইমধ্যে পৌর মেয়রের নির্দেশনায় জেলা শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে সহায়তা বুথ। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরাও৷
উদ্যোগটি বাস্তবায়নে নোয়াখালীর সাধারণ মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করে আসছে বলে জানান মেয়র৷ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থাকার জন্য পৌরসভার ভবনটিকে পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহরের মাইজদী থেকে সোনাপুর এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সহায়তা বুথ। সেখানে একই কালারের টি-শার্ট পরে সেবা দিবেন দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবকরা৷
পরীক্ষার আগের দিন থেকে হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীতে আগমন করে থাকেন৷ অপরিচিত জায়গা এবং থাকা-খাওয়ার ভোগান্তি তাদের সম্মুখীন হতে হতো৷ কিন্তু এই উদ্যোগ নেওয়ার পর ভোগান্তি দূর হয়েছে বলে জানান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এ উদ্যোগের প্রধান পরিকল্পনাকারী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল বলেন, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীতে আসেন৷ গত ছয় বছর ধরে আমি তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছি৷ প্রথমে আমি দেখলাম, যে পরিমাণ শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ পরীক্ষা দিতে নোয়াখালীতে আসে, সে তুলনায় আবাসন ব্যবস্থা ব্যবস্থা এখানে নেই৷ তাদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের থাকা,খাওয়া, চিকিৎসা এবং পরিবহণ সুবিধার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আসছি৷ এ বিষয়ে নোয়াখালীর সাধারণ জনগণও আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করেছে৷ এই ধারাবাহিকতা গত কয়েক বছরধরে আমি রক্ষা করে আসছি৷ এবারও আমি অতীতের ধারাবাহিকতায় উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভ কামনা থাকলো৷
ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে আমরা শতভাগ প্রস্তুত। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। নোয়াখালীর মানুষ প্রতিবছরই ভর্তিচ্ছুদের প্রতি আন্তরিকতা দেখায়৷ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদরা সবসময় উদ্যোগ নেন। এবারও পৌর মেয়র উদ্যোগ নিয়েছেন। বিষয়গুলো আসলেই প্রশংসনীয়। একটি সুন্দর ভর্তি পরীক্ষা উপহার দিতে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: