জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির মহানায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সোমবার (২৮ মার্চ, ২০২২) সকাল ৯টায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোঃ লুৎফর রহমান অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ’ চালু করার জোর দাবি জানান এবং শিক্ষামন্ত্রী এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এম.পি. বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বরচিত তিনটি গ্রন্থ ভালোভাবে পড়লে বাঙালি জাতি, রাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা ও ভাবনা সম্পর্কে জানতে পারবো এবং তাঁকে চিনতে পারবো। বঙ্গবন্ধুর ওপর পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণালব্ধ তথ্য হতে তাঁর সম্পর্কে অধিক জ্ঞানার্জন করতে পারি।”
তিনি বলেন, “যে চেহারায় পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল- বঙ্গবন্ধু তা কখনোই চাননি। তিনি শুধু পূর্ব পাকিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। তিনি জানতেন- পাকিস্তান রাষ্ট্রের কাঠামোর মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলার মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়। ভাষা আন্দোলন হতে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি ধাপেই বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির কাঙ্খিত স্বাধীনতা লাভ করে।”
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি কমাতেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রতিটি নতুন পদ্ধতিতে কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। সেসকল সমস্যা সমাধান করে শিক্ষার্থীদের সুবিধাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। সকলকে ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহৎ স্বার্থের জন্য একত্রে কাজ করতে হবে। এ সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতাগুলোকে আলাদা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব, আপনাদের প্রতি সে আস্থা আমার রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ভর্তি করানো উচিত। শুধুমাত্র সংখ্যার বিচারে নয়, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাই প্রধান হওয়া উচিত। শিক্ষকদের ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যানের চেয়ে একাডেমিক মাস্টারপ্লানের ওপর গুরুত্ব দেয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস যাতে সুন্দরভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে গড়ে তোলা যায় সে সম্পর্কে সরকার সচেষ্ট রয়েছে এবং তাঁর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোঃ লুৎফর রহমান।
উপচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, “সীমিত সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা থেমে নেই। এমনকি করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল না।”
এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, জবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: