শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া সাধারণের প্রবেশ ও বাইরে বের হওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে শনিবার দিবাগত রাতে শিক্ষার্থীদের বৈঠকের পর উপাচার্যের পদত্যাগ ও পরবর্তী বৈঠকের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় এ ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা পুলিশের সামনে মানববর্ম তৈরি করেন। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র বলেন, 'আমরা বাসভবনের বাইরে আটকে আছি, আর উনি সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন, সেটা হতে পারে না। এখন থেকে উপাচার্যের বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না।'
তবে এ বিষয়টিতে অবরুদ্ধ পরিস্থিতি না, বরং অহিংস একটি কর্মসূচি দাবি করে তিনি বলেন, 'যেহেতু উপাচার্যের বাসভবনে সবকিছুরই ব্যবস্থা আছে, আর আমরা ইউটিলিটি সেবা বিচ্ছিন্ন করছি না, তাই এটিকে অবরুদ্ধ হিসেবে বলা যাবে না। তবে পরিস্থিতি যেভাবে যাচ্ছে এবং যেভাবে কালক্ষেপণ হচ্ছে, তাতে আমরা হয়তো বাধ্য হবো উপাচার্যকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করতে।'
এদিকে গতরাতে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর আজ আবারও বৈঠকে বসার কথা থাকলেও এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে আসা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও শিক্ষার্থীদের এখনো কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
মুখপাত্র বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রী অনশন ভেঙে আলোচনা করতে বলেছেন, কিন্তু আমরাও জানতে চেয়েছিলাম যে- বোমাবাজ-গুলিবাদী উপাচার্যের পদ বেশি দামি নাকি অনশনরত শিক্ষার্থীদের জীবন? এ প্রশ্নের উত্তর আমরা এখনো পাইনি।'
পদত্যাগের দাবি ছাড়া অন্যান্য অভিযোগ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানানোর জন্য সব অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আমাদের আন্দোলন অহিংস আর অহিংস আন্দোলনে মৃত্যুর চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না। উপাচার্যের পদত্যাগের আগে আমরা অনশন চালিয়ে যাব।'
১৩ জানুয়ারি রাত থেকে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন ১৬ জানুয়ারি অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশি অ্যাকশনের পর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার বিকেল ২টা ৫০ মিনিট থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। পরবর্তীতে একজন শিক্ষার্থীর বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সে বাড়িতে চলে যায়। পরে গতকাল শনিবার থেকে স্বেচ্ছা গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করলে আজ রবিবার সকাল পর্যন্ত আরও ৪ শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: