উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের স্মরণে শেষদিনের ‘সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হাসান আজিজুল হক’ শীর্ষক ব্যানারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র- শিক্ষক (টিএসসিসি) মিলনায়তন কেন্দ্রে এ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমার বলেন, হাসান আজিজুল হক স্যার মানুষকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র লেখক সত্ত্বা নিয়ে বেঁচে থাকেননি। একটি দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক অধিকার এড়িয়ে গিয়ে, শুধুমাত্র লেখক সত্ত্বা নিয়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব। এটি স্যারের জীবনদর্শনের সাথে অসামঞ্জস্য। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতার কারণে, স্যারের জন্মভূমি ছিল বর্ধমান জেলায়। এই দেশভাগ তিনি মেনে নিতে পারেননি। এই দেশভাগের বেদনা শেষ পর্যন্ত ভক্ষন করেছেন তিনি। এই বেদনার ফলেই জন্ম হয়েছে 'আগুনপাখি' উপন্যাসের।
অনুষ্ঠানে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, হাসান আজিুজল হক আমাদের শিখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা তিনটি স্তরে বিভক্ত। প্রথমটি হলো শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা। যেটি সবথেকে দুর্বলতম শিক্ষা এবং এটিই এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদ্যমান রয়েছে। দ্বিতীয়টি হলো প্রথম শিক্ষাকে জীবনের সাথে মেলানোর শিক্ষা। যেটি ছাত্র-শিক্ষক মিলে শ্রেণিকক্ষের বাইরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলবে। তৃতীয়টি হলো যেটি ছাত্র-ছাত্রীদের দায়বোধ, দেশপ্রেম তৈরি করে, নেতৃত্ববোধ গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ নিবার্চন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের এই শিক্ষারই অংশ। যা বিগত ২৫ বছরে এই শিক্ষাটি দেখিনি। এখন শুধু রয়ে গেছে সবথেকে দুর্বলতম শিক্ষাটি।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার ঘোষ, নাটক চলচ্চিত্র নির্মাতা পারভেজ আমিন, ড. সাজ্জাদ বকুল, সুলতানুল ইসলাম টিপু।
আলোচনা সভা শেষে হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস অবলম্বনে ‘আলফা ও
‘আগুন পাখি' চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: