ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের পাঁচটি হলে বিবাহিত শিক্ষার্থীদের হলে না থাকার বিষয়ে যে নিয়ম ছিল তা রহিত করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী সহ বিভিন্ন হলের প্রভোস্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি সময় ট্রিবিউন কে নিশ্চিত করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন।
তিনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের হলের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নিয়ম ছিল তা রহিত করা হয়েছে। এবং অন্তঃসত্ত্বাদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং মা-বাচ্চা উভয়ের সুবিধার্থে হলে থাকার বিষয় বারণ করা হচ্ছে। তবে কোন ধরনের বাধা নেই। আজকের সিদ্ধান্তটি সুপারিশ হিসেবে সিন্ডিকেটে যাবে। তারপর চূড়ান্ত হবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আকরাম।
এছাড়া রুটিন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্তঃসত্ত্বা ও বিবাহিত মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকতে না দেওয়ার বিধি বাতিল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই বিধি বাতিল না করলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলে আসন বণ্টনসম্পর্কিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়মভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না।’
কিন্তু বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান এ বিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রীরা।
সম্প্রতি শামসুন নাহার হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে বিবাহিত দুই ছাত্রীর সিট নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর পর থেকেই পাঁচটি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধান বাতিলসহ মোট চারটি দাবিতে পাঁচটি ছাত্রী হলের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো— শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবক’র পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যে কোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল ও জরুরি প্রয়োজনে তাদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: