তিন মাসে হাজার হাজার ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১৩:৫১

সংগৃহীত ছবি

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে চলা এই অভিযানে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এমনকি গাজার কবরস্থানগুলোকেও ছাড়ছে না ইসরায়েল। অভিযানের নামে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির ১৬টি কবরস্থান ধ্বংস করে দিয়েছে।মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় কমপক্ষে ১৬টি কবরস্থান ধ্বংস করেছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে। মূলত উপগ্রহ চিত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়া ফুটেজের বরাত দিয়ে এই তথ্য সামনে এনেছে সংবাদমাধ্যমটি।এতে আরও বলা হয়েছে, গাজায় স্থল অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুলডোজার ব্যবহার করে কবরস্থানগুলো ভেঙে দিয়েছে এবং এমনকি এতে করে কবর থেকে কিছু মৃতদেহও বের হয়ে গেছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত আইন বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে কবরস্থানের মতো স্থানগুলোকে ধ্বংস করা এবং এগুলোকে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইসরায়েলের এই ধরনের কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি এবং ভিডিওগুলোর বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে সিএনএন বলেছে, অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কবরস্থানকে সামরিক ফাঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করেছে বলে মনে হচ্ছে।

একজন ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন, তারা গাজায় কিছু কবর খনন করেছে। তার দাবি, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাসের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের সময় আটক করা ইসরায়েলি বন্দিদের সেখানে কবর দেওয়া হয়েছিল কিনা তা নির্ধারণ করতেই এটি করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেছেন, গাজার কবরস্থানগুলোকে হামাস ‘সামরিক উদ্দেশ্যে’ ব্যবহার করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে কবরস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে আর কোনও উপায় ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পৌঁছেছে কমপক্ষে ২৫ হাজার ১০৫ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬২ হাজার ৬৮১ জন।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: