চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন শওকত আলী বীর বিক্রম

রোকন মিয়া, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | ২৪ আগষ্ট ২০২২, ০৩:৫৮

সংগৃহীত

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার (৭৪)। কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে চিলমারী ডিগ্রি কলেজ মাঠে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, জেলার সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা নামাজের আগে তাকে গার্ড অব অনার প্রদর্শন করার পর সর্বস্তরের জনসাধারণ তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু প্রমূখ।

গত সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর ৫টায় ঢাকায় ইন্তেকাল করেন তিনি।শওকত আলী সরকার দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

শওকত আলী সরকারের জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়ারী গ্রামে। তার বাবার নাম ইজাব আলী সরকার এবং মায়ের নাম শরিতুজ নেছা। তার স্ত্রীর নাম খালেদা খানম। তাদের চার মেয়ে দুই ছেলে।

শওকত আলী সরকার ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ নং সেক্টরের সাবসেক্টর মাইনকারচরের অধীন কুড়িগ্রামের রৌমারী-চিলমারী অঞ্চলে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। ওই সেক্টরের আবুল কাশেম চাঁদ কোম্পানির সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। ৭১ সালের ১৩ নভেম্বর উলিপুরের হাতিয়া যুদ্ধে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। যুদ্ধকালীন বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ চালিয়েছিলেন। এজন্য পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তিনি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ছিলেন। 

মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানের কারণে পাক বাহিনী তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চিলমারী থানায় মামলাকরেছিল বলে জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়। তার বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শওকত আলী সরকার চিলমারী উপজেলা পরিষদের পাঁচ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চালুর পর থেকেই তিনি চিলমারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: