'ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস' এমন প্রবাদ বাক্যের সাথে পরিচয় নেই এমন ক্রিকেট ভক্ত বা সমর্থক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ক্রিকেট মাঠে ক্যাচ মিস হওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। কোন কোন ক্ষেত্রে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি ক্যাচ খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। তারই নমুনা দেখা গেল বরিশাল-রংপুর ম্যাচে। রংপুরের ইনিংসে দলীয় ৯৮ রানের মাথায় কিউই ব্যাটার জিমি নিশামের সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বরিশাল। যার মাশুল দিতে হলো ম্যাচ হেরে।
ইতোমধ্যেই প্লে অফ নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। শুধুই প্লে অফ নয়, টেবিলের শীর্ষ দুইয়েও জায়গা পাকা রাইডার্সদের। অন্যদিকে, প্লে অফের পথে আছে ফরচুন বরিশাল। তাই পয়েন্ট টেবিল বিবেচনায় এই ম্যাচ বরিশালের জন্য ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে, সুযোগ পেয়েও রংপুরকে হারাতে পারল না তামিমরা। ঢাকায় প্রথম দেখায় হারলেও চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দেখায় তামিমদের হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল সাকিবরা।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৫১ রান তোলে বরিশাল। জবাবে জেমি নিশামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১৯.৩ ওভারে এক উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর।
১৫২ রানের মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল রংপুর। তবে, ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি ওপেনার মমিনুল হক। দলীয় ২১ রানের মাথায় তার বিদায়ে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। দুই বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার।
এরপর ব্রেন্ডন কিং কে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন সাকিব। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ৫৩ রান। দলীয় ৭৪ রানের মাথায় কিংয়ের বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলটি। ২২ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর দ্রুত আরও চার উইকেট হারিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে রংপুর। ব্যাট হাতে ১৫ বলে ২৯ রান করেন সাকিব।
দলীয় ৯৮ রানের মাথায় জীবন পেয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নেন নিশাম। দলীয় ১৩১ রানের মাথায় তার বিদায়ে ফের ধাক্কা খায় রংপুর। ১৬ বলে ২৮ রান করে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারিয়ে হারের শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছিল রংপুর। তবে, শেষদিকে জমে ওঠে নাটকীয়তা। জয়ের জন্য ছয় বলে রংপুরের প্রয়োজন ছিল দুই রান। হাতে ছিল মাত্র এক উইকেট। এমন পরিস্থিতিতে দলকে জেতান পেসার হাসান মাহমুদ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক তামিমের ব্যাটে দারুণ শুরু করে বরিশাল। মাত্র চার ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৩৮ রান তুলে ফেলে বরিশাল। তবে, পঞ্চম ওভারে সাকিবের প্রথম বলেই ধাক্কা খায় বরিশাল। অধিনায়ক তামিমকে ফেরান এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। আউটের আগে ২০ বলে ৩৩ রান করেন তামিম।
এরপর টম ব্যান্টকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে চাপ সামাল দেন কাইল মায়ার্স। এই দুইজনের ৭২ রানে জুটি ভাঙে ব্যান্টনের বিদায়ে। ২৪ বলে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। ব্যান্টনের বিদায়ের পর অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে বরিশাল। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। তিন বলে মাত্র পাঁচ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
মুশফিকের বিদায়ের মাত্র এক রান পরই ফেরেন মায়ার্স। ২৭ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন বিদায় নেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানে থামে বরিশাল। অবিশ্বাস্য বোলিং করেছেন রংপুরের পেসার আবু হায়দার রনি। চার ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন এই বাঁহাতি পেসার। আর চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন সাকিব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: