মৌলিকভাবে অজু ভঙ্গের ৭টি কারণ রয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণে অজু ভাঙবে না। যেমন- গালি দেওয়া, পরনারীর দিকে তাকানো, হাঁটুর উপরে কাপড় উঠানো ইত্যাদি। যদিও এসব মন্দ কাজ। তবু এগুলো অজু ভঙ্গের কারণ নয়। অজু ভঙ্গের কারণগুলো হচ্ছে-
পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া-১/৭)। হযরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- নিশ্চয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।’ (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস-৫৬৮)। রক্ত, পুঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া-১/১০)।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝরত, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক-১১০)।
মুখ ভরে বমি করা। হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবাসের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস-১২২১)।
থুতুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুতুতে রক্ত দেখে তাহলে থুতুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস-১৩৩০)।
চিত বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিত হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙে যাবে, কেননা চিত বা কাত হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। (ফলে বাতকর্ম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে)। মুসনাদে আহমাদ, হাদিস-২৩১৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-২০২)।
পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে। হযরত হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস-৪৯৩)।
নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে। হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস-৬১২)।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: