বাংলাদেশের মানুষের কাছে ‘গুম’ শব্দটি পরিচিত ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে গুমের সংস্কৃতি চালু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বিএনপির মানবাধিকার সেল আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ কেমন দেশ, কেমন রাষ্ট্র, কেমন সরকার আমরা বানালাম, যেখানে আমাদের সন্তানেরা নিখোঁজ হয়ে যাবে। যাদের হদিস খুঁজে পাওয়া যাবে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাদের তুলে নিয়ে গেলেও সরকার তার কোনো জবাব দেবে না।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে ‘গুম’ শব্দটি পরিচিত ছিল না। এই সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই শব্দটি চালু হয়েছে। যারাই একটু প্রতিবাদী সচেতন তাদের স্তব্ধ করে দেয়া হয় এবং গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য যখনই আন্দোলন করে কেউ, তখনই তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, গুম করে দেয়া হয়। সরকারের কাছে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গেলে তারা বলেন- ‘আমরা কিছুই জানি না’।’
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি মানবতার সমাজ গঠন করতে সক্ষম হবো বলে, গণতন্ত্রের পক্ষের একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে পারবো বলে। যেখানে মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে। অথচ সেই অধিকারগুলো আজ অবৈধ সরকার কেড়ে নিচ্ছে। বুলেট ও পিস্তল দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে চাইছে। আট থেকে দশ বছর ধরে যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ঘুম হওয়া ওইসব পরিবারের দায়িত্ব আজকে কে নেবে?’
মির্জা ফখরুল বলেন, আট-নয় বছরে আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর (বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি) মেয়ে এখনো দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে, কখন তার বাবা ফিরে আসবে। তার বাবা ফিরে আসে না। এই যে ছোট ছোট বাচ্চার আহাজারি আপনারা শুনলেন, আমরা তো আমাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। অসহায়ত্বের একটি বেদনা-যন্ত্রণা আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই। আমরা অবশ্যই আমাদের এ মানুষগুলোকে ফিরে পেতে চাই। পরিবারগুলোও যেন তাদের নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: