আইনমন্ত্রী আনিসুল হক খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে বলেছেন, আন্দোলনের হুমকির মাধ্যমে মানবিকতা কামাই করা যায় না। আইন আইনের গতিতে চলবে, আইন জিয়াউর রহমানের গতিতে চলবে না, আইন আপনাদের গতিতে চলবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ১৫ জন আইনজীবী আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তারা যে কথা বলছেন, তার কোনো নজির আছে কি না, তা যাচাই করে দেখছি। অথচ ঠিক এই সময়েই আন্দোলনেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে নিজ অর্থায়নে অসহায়, দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা শুনে থাকবেন- খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে হবে৷ বলা হচ্ছে- তা না হলে আন্দোলন হবে। আপনারা জানেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কী ঘটেছিল। বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সেদিন সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এ সত্যটা জানার পরও খালেদা জিয়া এই দিনে কেক কেটে মিথ্যা জন্মদিন পালন করেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে কেউ ভোট দিতে যায়নি। তারপরও ভোটারবিহীন নির্বাচন করে সংসদ বানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি আব্দুর রশিদকে। বেগম জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে গেলে মুখের ওপর গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর প্রধানমন্ত্রী গত বছর আমাকে বললেন, ‘বেগম জিয়া অসুস্থ। তার পরিবার দরখাস্ত দিয়েছে। আইনের মারফত তাকে ছেড়ে দাও’। পরে তাকে দুই শর্তে ছাড়লাম। প্রথমত- তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না, দ্বিতীয়ত- নিজ বাসা থেকে তিনি চিকিৎসা নেবেন। এমন তো বলিনি, তিনি হাসপাতালে বা অন্য কোথাও যেতে পারবেন না।
তিনি বলেন, এক মামলায় বেগম জিয়াকে নিম্ন আদালত সাজা দেয় পাঁচ বছর, উচ্চ আদালতে আপিল করলে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। আরেক মামলায় আদালত সাত বছরের সাজা দেয়। এত কিছুর পরও প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি দিয়েছেন। এখন বলছেন- চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে হবে। পরিষ্কার কথা, একটি আইনের দরখাস্ত করা বিষয় নিষ্পত্তি হয়ে গেলে, সেই দরখাস্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। আইন মন্ত্রণালয় দুবার দরখাস্ত নাকচ করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: