অতিমারি করোনাভাইরাসে গত বছরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি জানান, এই সময়ে হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতির ঘটনা সামান্য কমেছে; তবে রাহাজানির ঘটনা আগের চেয়ে সামান্য বেড়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মোট ঘটনা ছিল ২১ হাজার ৭৮৯টি, যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ১৮ হাজার ৫০২টি। সে হিসেবে মহামারীতে এক বছরে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে বিশ্বে সহিংসতার শিকার হয়ে আগের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি নারী হেল্পলাইনে ফোন করেছেন বলে ইউএন উইমেনের এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।
গত বছর মার্চে বাংলাদেশে মহামারী শুরুর পর থেকে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বাড়ার বিষয়ে অধিকারকর্মীরা ধারণা দিলেও পরিসংখ্যান ছিল না। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দেওয়া তথ্যে সেই ধারণার প্রতিফলন ঘটেছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপিত মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের ২০২০-২১ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ২২২টি, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৮৪২টি।
অন্যদিকে নারী নির্যাতনের ঘটনা ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১২ হাজার ৬৬০টি থেকে বেড়ে গত অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৭টি।
২০২০-২১ অর্থবছরে খুন রাহাজানিসহ বিভিন্ন অপরাধের আগের বছরের মতো থাকার চিত্রই এসেছে আনোয়ারুল ইসলামের দেওয়া তথ্যে।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩২১টি ডাকাতি ও ১ হাজার ৪৮টি রাহাজানির ঘটনা ঘটে; যা আগের বছরে ছিল যথাক্রমে ৩৩৬ ও ৯১৯টি।
২০১৯-২০ বছরে ৩ হাজার ৪৮৫টি খুনের বিপরীতে মহামারীর বছরে প্রাণ ঝরে ৩ হাজার ৪৫৮ জনের।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট মামলা ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার। যা গত জুন মাসের শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬২টিতে। এই হিসাবে প্রায় ৯১ হাজারের মতো কমেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে নিষ্পত্তি বাড়ায় এক বছরে মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে।
“গত বছর ডিজিটাল কোর্ট হওয়ার ফলে আইনজীবী যারা আছেন, তারা বাসা থেকে বা এক শহর থেকে অন্য শহরে থাকলেও উনারা অনলাইনে মামলাগুলো পরিচালনা করতে পারছেন, তাই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা গেছে।”
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: